দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে নানা নাটকীয়তায় দূরত্ব তৈরি হয়েছে ১৪ দলে। পুঞ্জিভূত ক্ষোভ ছিল শরিক নেতাদের মাঝে। এ নিয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন খোদ জোটনেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এসবের মধ্যেই দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর বৈঠকে বসে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিলেন ১৪ দলের শরিক নেতারা।

গণভবনে বৈঠকটি শুরু হয় বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যা ৭টায়। শেষ হয় রাত সাড়ে ১০টার পর। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার ওই বৈঠকে জোটনেত্রী শেখ হাসিনাসহ শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। বৈঠকের শুরুতেই বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা। এরপর একে একে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীসহ শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন।

সূচনা বক্তব্যে জোটের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির বক্তব্যে ছিল ঐক্যের সুর। দেশ ও জোটের প্রয়োজনে ঐক্য সমুন্নত রাখার পক্ষে নমনীয় বক্তব্য দেন তিনি। এ বিষয়ে জোট শরিকদের কথা শুনবেন, ভবিষ্যতে কী করা যায়, কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন- এমনও ইঙ্গিত দেন।

জোটের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির বক্তব্যে ছিল ঐক্যের সুর। দেশ ও জোটের প্রয়োজনে ঐক্য সমুন্নত রাখার পক্ষে নমনীয় বক্তব্য দেন তিনি। এ বিষয়ে জোট শরিকদের কথা শুনবেন, ভবিষ্যতে কী করা যায়, কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন- এমনও ইঙ্গিত দেন

পরে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে শরিকদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাদের প্রশ্নের নমনীয় ও ঐক্য ধরে রাখার পক্ষেই জবাব দেন জোটের শীর্ষ নেতা।

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন—বৈঠকে শেখ হাসিনার পর কথা বলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘গত সংসদ নির্বাচনের সময় জোট থেকে আমাদের প্রার্থী করা হয়। সেখানে আবারও আওয়ামী লীগের নেতা আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেলেন। আমি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাক্ষাৎ করতে পারলাম না। নির্বাচন হয়ে গেল, এরপরও দেখা করবো, তা-ও হলো না। এখন আমার প্রশ্ন, জোটের প্রাসঙ্গিকতা আছে কি না? জোটের গতিবিধি কোন পথে? আপনি যেভাবে বলবেন, সেভাবেই হবে। আপনার মুখ থেকে আমরা শুনতে চাই।’

মেননের বক্তব্যের জবাবে জোটনেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জোটের প্রাসঙ্গিকতা আছে বলেই আপনাদের ডেকেছি। জোট থাকবে না কেন? জোট আছে, ছিল, থাকবে।

এরপর কথা বলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনিও ক্ষোভ ঝাড়েন। ইনু বলেন, ‘জোটের প্রার্থী করে লাভ কী হলো? সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা প্রার্থী হয়ে গেলেন। আমাকে নৌকার লোকের বিরুদ্ধে ভোট করতে হলো। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বললেন, জোট নেই। এখনো আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা যখন বলেন, জোট নেই, তখন তো প্রশ্ন থেকেই যায়, জোটের গতি কোনো পথে? প্রাসঙ্গিকতা আছে কি? সাংবাদিকরাও প্রশ্ন করেন, জোটের অস্তিত্ব আছে কি না? এখন আপনার কাছেই সমাধান চাই। পরিষ্কার করুন। জোটের সামনে ভিশন-মিশন কী? কী নিয়ে কাজ করবো আমরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *