গত কয়েক দিন দেশজুড়ে বিরাজ করছে সাপ আতঙ্ক। বিশেষ করে আলোচনায় রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া)। এ নিয়ে ছড়াচ্ছে নানা রকম গুজবও। জীবন্ত রাসেলস ভাইপার ধরে আনতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা করে বিতর্কের জন্ম দেয় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ। যদিও এ ঘোষণা পরে প্রত্যাহার করে।

তথ্য বলছে, জেলায় সাপে কাটা রোগী বেড়েছে। মানুষও আতঙ্কিত। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, সময়মতো হাসপাতালে এলে রোগী বাঁচানো সম্ভব। অধিকাংশ রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। তাদের কাছে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুত আছে।

সাপে কাটা রোগীর একমাত্র প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন। বিভিন্ন সময় রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেন, চিকিৎসক এ ইনজেকশন পুশ করার ঝুঁকি নিতে চান না। রোগী মারা গেলে ঝামেলার ভয় পান। কখনো রোগীকে অন্যত্র পাঠান। প্রচার-প্রচারণার অভাবে সাধারণ মানুষ জানে না বলেও মনে করেন অনেকে। তবে এসব অভিযোগ ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘প্রচার-প্রচারণার অভাবে নয়, মূলত গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে এখনো সেই পুরোনো ধারণা রয়েছে যে সাপে কাটলে ওঝার কাছে নিতে হয়। যার কারলে হাসপাতালে আসতে দেরি করে, চিকিৎসাসেবা প্রদানেও দেরি হয়ে যায়। ফলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে।’

গত একমাসে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে কি না তাও জানা যায়নি। এতে আতঙ্কের কিছু নেই। তবে সবার সাবধানতা জরুরি। খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। জেলা শহরের হাসপাতালসহ সব উপজেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম মজুত করা হয়েছে। নয়টি উপজেলার প্রতিটিতে ২০-২৫ জনের চিকিৎসা দেওয়ার মতো অ্যান্টিভেনম মজুত আছে। এটা প্রতিনিয়ত আপডেট হয়। সাপে দংশন করলে ভয়ের কিছু নেই। হাসপাতালগুলোর চিকিৎসকরাও যথেষ্ট সচেতন ও আন্তরিক বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে আতঙ্কের কিছুই নেই। তারপরও গুজব না ছড়িয়ে সবাইকে সচেতন ও সাবধান থাকতে হবে। চরাঞ্চলের কৃষকদের নিরাপত্তায় শিগগির গামবুট দেওয়া হবে। বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হবে। সব হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *