বরিশাল নগরীতে আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঠিলেঢালা নামে মাত্র হুঁশিয়ারি থাকলেও থামাতে না তাদের কার্যক্রম। শতাধিক মাদক বিক্রেতারা অবাধে ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। একারনে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যুবসমাজ। ভংকর এই মাদক নগরীর যুবসমাজকে ঠেলে দিচ্ছে ধ্বংসের পথে। মাদকের টাকা জোগানে নগরীতে বেড়েছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নগরীর পলাশপুর, রসুলপুর, কেডিসি, লঞ্চঘাট, সাগরদী, রুপাতলী, ভাটিখানা, কাউনিয়া, নতুন বাজার, কলেজ এভিনিউ, বটতলা, অক্সফোর্ড মিশন রোড, কাশিপুর এবং শায়েস্তাবাদ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা বেশ সক্রিয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু অসাধু প্রশাসনিক কর্মকর্তার গোপন মদদে মাদক ব্যবসায়ীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। যখনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালায়, তখনই তারা আগেভাগে খবর পেয়ে গা ঢাকা দেয়। ফলে মূল অপরাধীরা অধরাই থেকে যায় এবং আগের চেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, কাউনিয়া থানার কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে এই এলাকায় মাদকের বিস্তার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে বরিশাল নগরীকে মাদকমুক্ত করতে প্রশাসন বেশ তৎপর রয়েছে বলে জানাযায়। গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি অভিযানে সফলতায় নগরবাসী সাধুবাদ জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, “আমরা মাদক নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি এবং চিহ্নিত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের জন্য বিশেষ অভিযান চলছে। কোনো মাদক বিক্রেতা রেহাই পাবে না। তিনি আরো বলেন,আমাদের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকেও আরও সক্রিয় হতে হবে।”
অন্যদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, ছোট-বড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) নগরীর কেডিসি এলাকায় তাদের বিভাগীয় গোয়েন্দা শাখার অভিযানে চার কেজি গাঁজাসহ তিনজনকে আটক করা হয়। তবে, বেশিরভাগ অভিযানে সফলতা মিলছে না বলে জানাযায়। কিছু অসাধু কর্মকর্তার কারণে এই দপ্তরটি বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় গোয়েন্দা কার্যালয়ের উপ-পরিদর্শক ইশতিয়াক হোসেন বলেন, “আমাদের প্রতিদিনই অভিযান চলছে। মাদক জব্দসহ আসামিও আটক হচ্ছে। তাদের এই অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।”
বরিশালকে মাদকমুক্ত করতে প্রশাসন সক্রিয় থাকলেও এখনো পুরোপুরি সফল হতে পারেনি। মূল অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে কঠোর নজরদারি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। নগরবাসী আশা করছে, প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে বরিশাল শিগগিরই মাদকমুক্ত শহরে পরিণত হবে।