ঢাকার উপকণ্ঠে পূর্বাচলের বাংলাদেশ চায়না বাংলা ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়নে ক্রেতা টানতে চলছে ছাড়ের ছড়াছড়ি। মেলার প্যাভিলিয়ন ও বিভিন্ন স্টলে চলছে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।

মেলায় ক্রেতারা বিশেষ মূল্যছাড়ে পণ্য কেনার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। আর ক্রেতা টানতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সাধ্যমতো ছাড় দিয়ে থাকেন। প্রতি মেলাতেই দোকানিরা আকর্ষণীয় মূল্যছাড়ের পাশাপাশি একটি কিনলে আরেকটি ফ্রি কিংবা প্যাকেজ আকারে মূল্যহ্রাসের ঘোষণা থাকে। বাণিজ্য মেলার ২৯ তম আসরে এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
রবিবার (১৯জানুয়ারি) মেলার ১৯তম দিনে । মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে প্রায় সব প্যাভিলিয়ন ও স্টলেই চলছে ছাড়ের ছড়াছড়ি। শুরু থেকেই বেশিরভাগ স্টলে বিশেষ মূল্যছাড়ে পণ্য বেচাকেনা হলেও মাস ব্যাপী এ মেলার প্রায় মাঝামাঝি সময়ে এসে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
দেখা গেছে সকাল থেকেই নানা বয়সীরা আসছেন মেলা প্রাঙ্গণে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। দুপুরের পর থেকে দর্শনার্থীর পদচারণায় ভরে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ।
তবে বিক্রেতারা বলছেন, মেলায় মানুষের ভিড় বাড়লেও সেভাবে বেচা-বিক্রি জমে ওঠেনি। মেলায় আগতদের বেশিরভাগই দর্শনার্থী। তবে ক্রেতা টানতে স্টলগুলোয় দেওয়া হয়েছে ছাড় ও অফার।
বিভিন্ন ধরনের পোশাক, যন্ত্রপাতি, ফার্নিচার, কার্পেট, প্রসাধনসামগ্রী, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস পণ্য, আসবাব, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি সামগ্রী, ফার্নিচার, ক্রোকারিজ ও বিভিন্ন ধরনের পণ্যে নির্ধারিত মূল্যের ওপর শতকরা ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে।
মেলা উদ্বোধনের পর থেকে প্রথমদিকে শীতের দাপটে দর্শনার্থীর সংখ্যা তেমন বেশি না থাকলেও ছুটির দিনগুলোতে মেলা প্রাঙ্গণ দর্শক সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে। মেলার নির্ধারিত সময়ের মাঝামাঝি এসে ক্রেতাদর্শনার্থীর সংখ্যা ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দোকানেরাও সবাই ছাড় দিতে শুরু করেছেন। মেলায় বিভিন্ন দেশের পণ্যের স্টল থাকলেও দেশীয় উদ্যোক্তাদের পণ্যে বেশি আগ্রহ দেখান ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।
মেলায় পোশাক ব্র্যান্ডের স্টলে বিভিন্ন রকমের ছাড়ে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ক্রোকারিজ, বস্ত্রসামগ্রী, রাইস কুকার, গ্যাসের চুলাসহ নানা গৃহস্থালিসামগ্রী পণ্য ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে। মেলায় বস্ত্রখাতের স্টলগুলোতে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ছাড়ে বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
অন্যদিকে যমুনা গ্রুপের যমুনা ইলেকট্রনিকসের বিভিন্ন পণ্যে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের সব পণ্যে ১২ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নাভানা ফার্নিচার, ব্রাদার্স ফার্নিচার ও নাদিয়া ফার্নিচারে ছাড় আছে।
যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইল লিমিটেডের ম্যানেজার রাজিব সাহা বলেন, বিগত বছরের মতো এবারও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা উন্নতমানের পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি। যমুনার উৎপাদিত পণ্য আমরা বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করছি।
নাদিয়া ফার্নিচারের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সব পণ্যে ৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। বিক্রিতে ও বেশ সাড়া পাচ্ছি।
সোনারগাঁ থেকে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন,ক্রোকারিজ আইটেমে ছাড় থাকে তাই পরিবার নিয়ে আসলাম। ৫০% ছাড়ে কিছু পোশাকও কিনলাম।
আড়াই হাজার থেকে মেলায় আসা গৃহবধূ সামান্তা নাহার বলেন, ঘরের জন্য কিছু ফার্নিচার প্রয়োজন ছিল। শুনেছি মেলায় ছাড়ে পাওয়া যায়। তাই আসলাম। ৫০% ছাড়ে একটি খাট ও একটি ওয়ারড্রব কিনলাম।

মাসব্যাপী এই মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন খোলা থাকছে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *