সরকারের পক্ষ থেকে মিথ্যা বলে ঢাকার হাজারীবাগ থেকে চামড়া ব্যবসায়ীদের সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। তারা বলেছেন, কোনো অবকাঠামো ঠিক না করে হাজারীবাগ থেকে চামড়া ব্যবসায়ীদের সাভারে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধননাগার (সিইটিপি) ঠিক না থাকায় আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় ৭০-৮০ শতাংশ কম দামে চামড়া রপ্তানি করতে হচ্ছে।
রোববার রোববার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ’র সঙ্গে বৈঠক করে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মোহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন এবং প্রধান উপদেষ্টা এম এ রাশিদ ভূঁইয়া।
রাশিদ ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমরা টাকা পয়সা চাইনি। আপনারা জানেন আমাদের হাজারীবাগ থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল সাভারে। আমরা ওখানে (সাভারে) গিয়ে ব্যবসা করতে পারিনি। সিইটিপি ঠিক নেই। আগে যা বলেছিল সব মিথ্যা কথা। কোনো অবকাঠামো ঠিক হয়নি, আমাদের নিয়ে গেছে। এখন ওনার (অর্থ উপদেষ্টা) কাছে জিনিসগুলো জানিয়েছি। জিনগুলো ওনারা সমাধান করবেন আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।
আপনারা কি দাবি জানিয়েছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, আমাদের দাবি সিইটিপি ঠিক করে দিতে হবে। ওনাদের কারণেই আমরা ক্ষতিগ্রস্থ। এ কারণে সুদ মওকুফ করে আমাদের ঋণ রিসিডিউল করে দেয়ার কথা বলেছি।
এরপর মোহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, বিসিক শিল্প নগরিতে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো শতভাগ রপ্তানিমুখী। আমরা রপ্তানি করবো এ জন্যই আমাদের সমস্তরকমের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সিইটিপি অসম্পূর্ণ থাকার কারণে বর্তমানে আন্তর্জাতিক যে বাজার দর আছে আমরা তার থেকে ৭০-৮০ শতাংশ কম দামে চীনে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। আমরা যদি এটার ভ্যালু এডিশন বাড়াতে পারি, তাহলে আগের জায়গায় যেমন ২০১৫-২০১৬ সালে দুই হাজার টাকায় চামড়া কিনতাম, আমরা আবার সেই জায়গায় যেতে পারবো।
তিনি বলেন, সাভার বিসিক শিল্প নগরীতে ট্যানারি মালিকদের যে অংশগ্রহণ সেটা যথার্থই ছিল। ব্যর্থ যেটা হয়েছে, সেটা সরকারি প্রতিষ্ঠান বিসিক’র কারণেই ব্যর্থ হয়েছে। কাজেই ব্যর্থতার দায়তার কোনো অবস্থাতেই ট্যানারি মালিকদের ওপর বর্তায় না। অর্থ উপদেষ্টা আমাদের কথা শুনেছেন। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
বৈঠক শেষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে রপ্তানি বহুমুখীকরণের কথা বলছি সেখানে চামড়া খাতের বড় একটা সুযোগ রয়েছে। তবে তাদের নানাবিধ সম্ভাবনা ও সমস্যা আছে। সে সব বিষয়ে আমরা আলাপ করেছি। তাদের ট্যানারি সাভারে স্থান্তরিত করা হয়েছে। সেখানে পরিবেশগত দিক, অর্থায়ন, রপ্তানিতে চামড়ার সার্টিফিকেশন নিয়ে আলাপ করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মোট কথা আমরা চামড়া শিল্প ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির একটি বড় খাত হিসেবে তৈরি করতে চাই। সেটার সম্ভাবনা আছে। আমাদের চামড়া শিল্পের সাথে যারা জড়িত তারা খুব অভিজ্ঞ। এ খাতের একটি সুবিধা হলো এর কাঁচামাল দেশীয়। এটার সাথে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ খাত জড়িত। তাই এই খাতকে সহায়তা করলে আরো একটা খাতের উন্নতি হবে।