আগের ম্যাচের জয়টা যে কেবলই অঘটন ছিল না সেটা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বুঝিয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশকে ৬ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে নিলো বিশ্বকাপের সহ-আয়োজকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে এটা ইতিহাস। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ ছিল এটি। আর প্রথম দেখাতেই টেস্ট খেলুড়ে দলকে হারিয়ে সিরিজ জিতে নিলো দেশটি।
বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছিল ১৪৫ রানের। শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। দলীয় ১ রানের মাথায় বাঁহাতি পেসার নেত্রাভাকারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাকে ফেরেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
তানজিদ হাসান তামিম শুরুটা করেছিলেন ভালো। কিন্তু ১৫ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ১৯ করে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত উইকেটে থাকেন অনেকটা সময়। তবে তার ইনিংসটি ঠিক টি-টোয়েন্টির সঙ্গে মানানসই ছিল না।
৩৪ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় ৩৬ রান করে তাওহিদ হুদয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে তিনি হন রানআউটের শিকার। ২১ বলে এক ছক্কায় ২৫ রানের বেশি এগোতে পারেননি হৃদয়ও। ইনসাইডেজে তিনি বোল্ড হন অ্যান্ডারসনের বলে। এর এক ওভার পর অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহও (৪ বলে ৩) বোল্ড হলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ১০৬ রানে হারায় ৫ উইকেট।
আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব আল হাসান হাল ধরেন। দল যখন জয় থেকে ২১ রান দূরে, ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ হন জাকের আলি (৫ বলে ৪)। ৪ বলের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
২৩ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৩০ রান করে আলি খানের বলে ইনসাইডেজে বোল্ড হয়ে যান সাকিবও। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার ফেরার পরই সব আশা শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১৯.৩ ওভারে ১৩৮ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা।
যুক্তরাষ্ট্রের আলি খান ২৫ রান দিয়ে নেন তিনটি উইকেট।
এর আগে ৬ উইকেটে ১৪৪ রান তুলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। প্রেইরি ভিউতে ব্যাট করতে নেমে রয়েসয়ে খেলে তারা। কঠিন বল পেলে খেলেছে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে, আর খারাপ বল পেলেই হাঁকিয়েছে বাউন্ডারি কিংবা ছক্কা।
মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব ও শরিফুল ইসলামকে দেখেশুনে খেলে উদ্বোধনী জুটিতে ৪৪ রান করেন দুই ওপেনার স্টেভেন টেইলর ও মোনাঙ্ক প্যাটেল। সপ্তম ওভারে বল করতে এসেই জুটি ভাঙেন রিশাদ হোসেন। দুই বলে দুই উইকেট শিকার করেন এই অফস্পিনার।
ওভারের চতুর্থ বলে রিশাদকে লংঅন অঞ্চলে উড়িয়ে মারেন টেইলর। সেখানে ফিল্ডিং করছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। সুযোগ মিস করলেন না তিনি। টেইলরের (২৮ বলে ৩১) সহজ ক্যাচটি মুষ্ঠিবদ্ধ করেন তিনি।
পরের বল গুডলেন্থের করেন রিশাদ। নতুন ব্যাটার গাউস (১ বলে ০) কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটি ব্যাটে স্পর্শ করিয়ে দেন। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক জাকের আলি।
এরপর তৃতীয় উইকেটে আবার জুটি করেন স্বাগতিক দলের দুই ব্যাটার প্যাটেল ও জোনস। দেখেশুনে খেলে ৫৬ বলে ৬০ রানের জুটি করেন তারা। অবশেষে তাদের সেই জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসারকে লংঅনে উড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন জোনস (৩৪ বলে ৩৫)। বাউন্ডারি লাইন থেকে দ্রুত গতিতে দৌড়ে এসে তাকে সহজ ক্যাচ বানান মাহমুদউল্লাহ।
এদিন কোরি অ্যান্ডারসনকে সুবিধা করতে দেননি পেসার শরিফুল। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে তাকে বোল্ড করে দেন বাঁহাতি পেসার। ১০ বলে ১১ রান করেন অ্যান্ডারসন। এ্কই ওভারের চতুর্থ ফিফটির পথে হাঁটতে থাকা প্যাটেলকেও (৩৮ বলে ৪২) বোল্ড করেন শরিফুল।
প্রথম টি-টোয়েন্টির দিনের ম্যাচসেরা হারমিত সিংয়ে আজ রানের খাতাই খুলতে দেননি মোস্তাফিজ। তাকে সাকিবের হাতে ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি। আর ৭ রানে অপরাজিত ছিলেন নীতিশ কুমার।
বাংলাদেশের হয়ে দু্টি করে উইকেট শিকার করেন রিশাদ, শরিফুল ও মোস্তাফিজ।