ক্রিকেট মাঠে অধিনায়কের ভূমিকাটা অন্য যেকোনো খেলার চেয়ে খানিক বেশিই বলা চলে। যেখানে কেবল দল পরিচালনাই না, চাপ থাকে নিজের পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটানোর। সঙ্গে পুরো দলকে জাগিয়ে রাখার কাজটাও করতে হয় নিপুণভাবে। গেল সপ্তাহে ক্রিকেটের ব্যস্ত সপ্তাহে অধিনায়করাও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে হয়েছেন নায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া কিংবা বাংলাদেশের খেলায় অধিনায়করা ছিলেন দলের সেরা পারফর্মারদের একজন হয়ে। নিজ নিজ জায়গা থেকে রেকর্ড গড়েছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, দক্ষিণ আফ্রিকার টেম্বা বাভুমা আর বাংলাদেশের মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে মুদ্রার অন্যপিঠ দেখেছেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। অ্যাডিলেডে দীর্ঘদিন পর মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নেমে আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। তাতে কমপক্ষে ১ হাজার রান করা ভারতীয় অধিনায়কদের মধ্যে ২য় সর্বনিম্ন গড়ে নেমে এসেছেন তিনি। কমপক্ষে ১০০ রান করেছেন এমন ভারতীয় অধিনায়কদের মাঝে সর্বনিম্ন গড় কপিল দেবের। হরিয়ানা হ্যারিকেন খ্যাত কপিলের টেস্ট গড় ৩১.৭২। এরপরেই আছেন রোহিত শর্মা। তার বর্তমান টেস্ট ক্রিকেট গড় ৩২.৪২। মানসুর আলী খান পাতৌদির গড় ৩৪.১৪। ভারতীয় আর কোনো অধিনায়ক ৩৫ এর নিচে গড় নেই (কমপক্ষে ১ হাজার রান)। এছাড়া চলতি বছর এই নিয়ে ১৪বার একক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েছেন রোহিত। যেটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই বছরে সবচেয়ে বেশি মোট ১৫ বার একক অঙ্কের ঘরে আউট হয়েছিলেন বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্ত। টাইগার অধিনায়কের অবশ্য চলতি বছর আর কোনো খেলা নেই। রোহিত দুই টেস্টে অন্তত ৪ ইনিংস খেলবেন বছরের বাকি দিনগুলোতে। ব্যাটিং পারফরম্যান্সের জন্য প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েন টেম্বা বাভুমা। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে যেন সমালোচকদের একহাতই নিয়েছেন বাভুমা। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম অধিনায়ক হিসেবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের সব ইনিংসেই অন্তত ফিফটি করেছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। এর আগে ২ ম্যাচের সিরিজে ৩ ফিফটি ছিল জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক তাদেন্দা তাইবু (প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ) এবং অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের (প্রতিপক্ষ ভারত)। অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে ১২ ইনিংসে করেছেন ৬৩২ রান, গড় ৫৭.৪৫, যেখানে রয়েছে ২টি সেঞ্চুরি এবং ৪টি ফিফটি। এই পারফরম্যান্স তাকে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ব্যাটিং গড়ে শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে এনে দিয়েছে। অন্তত ১০ ইনিংস খেলা অধিনায়কদের মধ্যে গড়ের দিক থেকে তিনি আছেন ষষ্ঠ স্থানে। সবার ওপরে থাকা অস্ট্রেলিয়ার ডন ব্র্যাডম্যান অবশ্য সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে (১০১.৫২)। অ্যাডিলেড টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সর্বনাশ করেছিলেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তাতে অন্তত দুই রেকর্ডের তালিকায় নিজেকে উঠিয়ে এনেছেন এই পেসার। অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেটের তালিকায় পাঁচে উঠে এসেছেন কামিন্স। অজিদের অধিনায়ক হওয়ার পর টেস্টে তার উইকেট ১১৫। সামনে আছেন নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টরি (১১৬), ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্যারি সোবার্স (১১৭), অস্ট্রেলিয়ার রিচি বেনো (১৩৮) এবং পাকিস্তানের ইমরান খান (১৮৭ উইকেট)। কামিন্স যেভাবে ছুটছেন তাতে খুব দ্রুতই ইমরানের খানের রেকর্ডের দিকে এগিয়ে যেতে পারেন তিনি।

অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ফাইফারের হিসেবে অবশ্য ইমরান খানের সঙ্গেই শীর্ষস্থানে আছেন কামিন্স। ইমরান এবং কামিন্স দুজনেই টেস্ট ফরম্যাটে অধিনায়ক হয়ে ৬বার করে ফাইফার পেয়েছেন। ৫টি ফাইফার আছে রিচি বেনোর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের অধিনায়কদের মধ্যে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ স্কোরের নতুন রেকর্ড গড়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। প্রথম ওয়ানডেতে করেছিলেন ৭৪ রান। পেছনে ফেলেছেন ২০১৪ সালে মুশফিকুর রহিমের করা ৭২ রান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *