মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ।

মানব মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে সানজিদা আক্তার (৩০) নামের এক নারী মারা গেছেন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে ঢাকার মহাখালী সংক্রামক রোগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

চিকিৎসার বিস্তারিত
সানজিদার শরীরে এইচএমপিভি শনাক্তের পাশাপাশি অন্যান্য জটিলতাও ছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন ধরে চিকিৎসা চললেও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। অবশেষে বুধবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রাতেই তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নরসিংদীর নিজ গ্রামে পারিবারিকভাবে তাকে দাফন করা হয়েছে।

ভাইরাস শনাক্ত ও চিকিৎসার সময়কাল
গত রোববার (১২ জানুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সানজিদার শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত করে। চিকিৎসকরা জানান, তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। তবে শরীরের অন্যান্য জটিলতার কারণে তার জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব
চলতি বছরের শুরুতে চীনে প্রথম মানব মেটানিউমোভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। দ্রুত এই ভাইরাস চরম আতঙ্ক ছড়ায়। পরে জাপান ও ভারতে এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়। বাংলাদেশেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইচএমপিভি সাধারণত শিশু, বৃদ্ধ এবং শারীরিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। লক্ষণগুলোর মধ্যে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়ার মতো সমস্যা রয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের সতর্কতা ও পরামর্শ
এই ঘটনার পর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ভাইরাসটি ছড়ানো রোধে তারা নিম্নলিখিত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন:

নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।

জনসমাগম এড়িয়ে চলা।

হাঁচি বা কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, এইচএমপিভির সংক্রমণ ঠেকাতে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে যোগাযোগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সানজিদা আক্তারের অকালমৃত্যু শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য একটি সতর্কবার্তা। এই ঘটনা আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *