ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ইস্যুতে যখন আলোচনা তুঙ্গে তখন দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম না চালাতে পারা ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা প্রকাশ্যে আসছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোটা সংস্কার ইস্যু থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার পতনের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার। গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর) ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ৯ দফার ঘোষক আব্দুল কাদের বিষয়টি সামনে আনেন।
কাদেরের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘৯ দফা প্রচার-প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল ছাত্রশিবির। যেহেতু নেট নেই, গোলাগুলি-কারফিউয়ের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সশরীরে হাউসে হাউসে পৌঁছে দিয়েছে, বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা তারাই করেছে।’
শুধু তাই নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রশিবির সেক্রেটারি ফরহাদের সাথে আলোচনা করে এই ৯ দফা তৈরি হয়েছিল বলেও জানান এই সমন্বয়ক।
কাদেরের এই ঘোষণার আগেই সামনে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমের নাম। নিজেই ফেসবুক পোস্টে নিজের পরিচয় তুলে ধরেন। এরপর থেকেই শুরু হয় ছাত্রশিবিরকে নিয়ে আলোচনা।
দেশের মানুষ যখন স্বৈরাচার হাসিনা থেকে মুক্তির দিন গুনছিলেন তখন ছাত্রশিবিরের ছেলেরাই পরিচয় গোপন করে একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর যখন ঢাবি ছাত্রশিবির শাখার কথা প্রকাশ্যে এলো তখন অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে শুরু করেছে যে, এতো বছর ঢাবিতে ছাত্রশিবিরের নেতৃত্বে কারা ছিলেন। এমনই প্রেক্ষাপটে এবার প্রকাশ্যে আসছেন শিবিরের ঢাবি শাখার বর্তমান ও আগে দায়িত্ব পালন করা নেতারা।
ঢাবি শাখার বর্তমান সভাপতি সাদিক কায়েম প্রকাশ্যে আসার পর একদিন পর গতকাল রোববার প্রকাশ পায় সেক্রেটারি নাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সন্বয়ক আব্দুল কাদের হাসিনা পতনে ছাত্রশিবিরের সাহসী ভূমিকা প্রকাশ করতে গিয়ে জানান, ঢাবি ছাত্রশিবির শাখার বর্তমান সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় এক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সংগঠনটির ঢাবি শাখা কখনই নেতৃত্বহীন ছিল না। প্রতিবছরই কমিটি গঠন হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে কারও নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে এখন সময় এসেছে সবাইকে সামনে আনা হবে।
জানা যায়, ২০২২-২৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন সিবগাতুল্লাহ। বর্তমানে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন তিনি। এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সিবগাতুল্লাহ। বর্তমান ঢাবি শাখার নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রের নিয়মিত যোগাযোগ এবং আন্দোলনের রোডম্যাপ তৈরি সবটুকুই তিনি সমন্বয় করেন। সিবগাতুল্লাহর সঙ্গে সে সময় সেক্রেটারি ছিলেন মো. শাহিনুর রহমান।