কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে “অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ ট্রাস্ট” বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান-২০২৫ সম্পন্ন হয়েছে। এতে তিন সেশনের ৩০ জন শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকে পাঁচ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সায়দা তালুকদার রাহীর সঞ্চালনায় এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এর সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে এই বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ, আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মু. আলী মুর্শেদ কাজেমসহ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মু. আলী মুর্শেদ কাজেম বলেন, ‘এই ট্রাস্টের কর্ণধার এইখানে উপস্থিত আছেন, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা। কৃতজ্ঞতা ট্রেজারার স্যার ও ভিসি স্যারের প্রতি। কিছুদিন এই বৃত্তিটা বন্ধ ছিল। আমাদের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অনেক চেষ্টা করেছেন এটি চালু রাখার তবে কিছু কারণে হয়নি। এখন আবার আমরা তিনটা ব্যাচের মাঝে বৃত্তি প্রদান করতে পেরেছি। আশা করি এর অগ্রযাত্রা চলমান থাকবে।’

অ্যাডভোকেট তপন বিবারী নাগ বলেন, ‘সামাজিক অবক্ষয়ের যুগে এখনো কিছু না কিছু মানুষ সৎ থাকতে চায়। আমার জীবনে কখনো কোনো এমপি মন্ত্রীর সাথে আপোষ করিনি। নীতির প্রশ্নে কখনো কোনো ব্যক্তির সাথে আপোষ করিনি। আমার খারাপ লেগেছে যে, বৃত্তিটা কিছুদিন বন্ধ ছিল। এটি আবার চালু হয়েছে এবং আশা করবো সেটি চলমান থাকে। আমি কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে টাকাটা দিচ্ছি এটার বিনিময়ে হয়তো এক হাজার ফিটের একটা ভালো বাড়ি বানাতে পারতাম। কিন্তু আমি এদের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই এইভাবে। আর এইখানে যারা আছো তোমরা একসময় জীবনে অনেক বড় কিছু করে এইরকম মানবিক কাজ করে যাবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী বলেন, ‘অ্যাডভোকেট তপন বিহারী নাগ একজন মহান ব্যক্তি। আমি উনাকে স্যালুট জানাই। তোমরা যারা এই বৃত্তি পাচ্ছো তারা কখনো উনাকে ভুলবে না। উনি একটা কথা বলেছেন, যে আজকের এই সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যাটা কমে গেছে। যারা আজকে স্কলারশিপ পাচ্ছো তোমরা চেষ্টা করবে এই সমাজকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাবা। বাংলাদেশের মানুষ পুলিশ, আইনজীবীদের ভয় পায়। বিপদে না পড়লে তাদের কাছে কেউই যেতে চায় না। তবে এই সবকিছুর মধ্যে তপন বিহারী নাগ একজন আলোর দিশারী। তার এই কর্ম ও কৃতিত্ব তাকে সারাজীবন বাঁচিয়ে রাখবে।’

সভাপতির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘তপন বিহারী নিঃসন্দেহে একজন মহৎ লোক। তিনি নিজেই বলেছেন সে যে পরিমাণ বিভিন্ন ট্রাস্টে দান করেছেন তা দিয়ে চাইলে তিনি অনেক সম্পত্তির মালিক হতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে বিভিন্ন মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করে মহৎ মনুষ্যত্বের পরিচয় দিয়েছেন। আমি আশা করি আজকে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা আগামীতে আইন অঙ্গনে ভালো কাজ করবেন, জুডিশিয়ারিতে গিয়ে দেশের সেবা করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *