প্রতি বছর ঈদুল আজহায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ থাকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ। এবার ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন। আর ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। এখন এ ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

কোরবানির বর্জ্যের পাশাপাশি ঢাকার পশুর হাটের বর্জ্যও যথাসময়ে অপসারণ বা পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সংস্থা দুটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ঈদের দিন দুপুর ২টা থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হবে। তবে ঢাকায় অনেকেই নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই দেয় না। আবার অনেকে ঈদের দ্বিতীয় দিন পশু জবাই করেন। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে কিছুটা বেগ পেতে হয়।

সিটি করপোরেশনের এমন প্রস্তুতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নগরের বাসিন্দারা। বুধবার (১৩ জুন) ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হাটে কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে ফার্মগেটের মণিপুরি পাড়ার বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন ও আসিফ মাহবুব বলেন, ‘আগে কোরবানির পশুর বর্জ্য এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সড়কে পড়ে থাকতো। দুর্গন্ধে রাস্তা-ঘাটে চলাচল করা যেত না। এখন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন যে ঘোষণা দিয়েছে, সে অনুযায়ী কাজ হলে নগরবাসী খুশি হবেন।

আগামী ১৭ জুন দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে ডিএনসিসি এলাকায় ৬টি ও ডিএসসিসি এলাকায় ১০টি অস্থায়ী পশুর হাট বসছে। এর বাইরে ডিএসসিসির সারুলিয়ায় পশুর হাট ও ডিএনসিসির গাবতলীতে স্থায়ী হাট রয়েছে। তবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় আনুমানিক কতসংখ্যক পশু জবাই করা হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি জানাতে পারেনি।

ডিএসসিসির প্রস্তুতি
ডিএসসিসিতে মোট ওয়ার্ড ৭৫টি। আয়তন ১০৯ দশমিক ২৫১ বর্গকিলোমিটার। ডিএসসিসির জনসংযোগ বিভাগ সূত্র জানায়, এবার ডিএসসিসির ওই ৭৫টি ওয়ার্ডে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে তাদের ৯ হাজার ৪৯৭ জন কর্মী রয়েছে। এর মধ্যে নিজস্ব জনবল চার হাজার ৯৯৭ জন, প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডারের (পিসিএসপি) চার হাজার ৫০০ জন (প্রতি ওয়ার্ডে গড়ে ৬০ জন করে) দায়িত্ব পালন করবেন।

ডিএনসিসির প্রস্তুতি
১৯৬ দশমিক ২২ বর্গকিলোমিটার আয়তন বা এলাকা নিয়ে ডিএনসিসি গঠিত। এখন সংস্থটির ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৪টি। ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র জানায়, এবার ডিএনসিসির ২৮টি ওয়ার্ডে নিজস্ব দুই হাজার ৩৯৪ জন জনবল কোরবানির বর্জ্য অপসারণে কাজ করবে। বাকি ২৬টি ওয়ার্ডে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দুই হাজার ৩২৩ জন, ভ্যান সার্ভিসকর্মী চার হাজার ২০০ জন, পিকআপে নিয়োজিত ৪২০ জন কাজ করবেন।

বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার ঈদে ৬ ঘণ্টায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর-কর্মকর্তারাও মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করবেন। আমি নিজে মাঠে থাকবো। জনগণকে অনুরোধ করছি যত্রতত্র কোরবানির বর্জ্য ফেলবেন না। নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেবেন। আমরা নিজ দায়িত্ব বর্জ্য নিয়ে যাবো।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *