সবজির দাম কমতে না কমতে নতুন করে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে না আসায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি নিয়ে কারসাজি চলছে। এক মাসের ব্যবধানে দাম বাড়ানো হয়েছে ১৫-৪০ টাকা।

এতে খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বাড়ানো হয়েছে। কেজিপ্রতিতে গুণতে হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা। পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে আদা রসুনের দাম। সঙ্গে সব ধরনের মসলাপণ্য কিনতে ক্রেতার উচ্চমূল্য গুণতে হচ্ছে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ২৭.২৭ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর একই সময়ের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি আমদানি করা পেঁয়াজ এক মাসে বেড়েছে ২.২৬ শতাংশ ও গত বছর একই সময়ের তুলনায় পণ্যটি ২৫ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে গত ৫ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজের ওপর থেকে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি শুরুর পর আমদানিও স্বাভাবিক। তারপরও স্থলবন্দরগুলোতে বাড়ানো হচ্ছে দাম। বন্দরে এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারি ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হলেও সোমবার বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকা।

অন্যদিকে মৌসুম শেষে কৃষকের ঘরে এখন পেঁয়াজের মজুত কম। ফলে বাজারে দেশি জাতের সরবরাহ কমেছে। আর এই সুযোগ নিয়েছে অসাধুরা।

সোমবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা। যা শুক্রবারও ১২০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা দশ দিন আগেও ১১০ থেকে ১২০ টাকা ছিল। আর এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ১০৫-১১০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকা। যা সাত দিন আগে ১০০-১১০ টাকা ছিল। আর এক মাস আগে বিক্রি হয়েছে ৯০-১০০ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. আল আমিন বলেন, বছরে এই সময়টা এলেই বিক্রেতারা পেঁয়াজের দাম বাড়ায়। এবারও একই চিত্র। তবে গত কয়েক বছর ভারত রপ্তানি বন্ধ করায় দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার ভারত রপ্তানি করছে, বাজারেও পণ্যটির ঘাটতিও নাই। তারপরও বিক্রেতারা দাম বেশি নিচ্ছে।

এদিকে পেঁয়াজের সঙ্গে আদা ও রসুনের দাম বাড়ানো হয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৬০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি আদা প্রতি কেজির দাম ৪৩০-৫২০ টাকা। যা সাত দিন আগেও ৪৩০-৫০০ টাকা ছিল। আমদানি করা আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-৩০০ টাকা।

এছাড়া প্রতি কেজি শুকনা মরিচের দাম ২৩০-৩৫০ টাকা। প্রতি কেজি জিরা ৬৮০-৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪৮০-৫৮০ টাকা। লবঙ্গ প্রতি কেজি ১৩০০-১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক মাস আগেও ১২০০-১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এলাচ (ছোট দানা) প্রতি কেজি ৩২০০ থেকে ৩৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা মাসখানেক আগেও সর্বোচ্চ ৩৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ধনে ২০০-২৬০ টাকা, তেজপাতা খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সোমবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায় পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীতে ছয়টি টিম অভিযান পরিচালনা করেছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একযোগে অভিযান চলেছে। অনিয়ম পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অসাধুদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *