ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে থামছেই না ইসরাইলি বর্বরতা। গত দুই দিনে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় আরও অন্তত ১৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এ নিয়ে প্রায় ১৫ মাস ধরে চালানো ইসরাইলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা সাড়ে ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তার আগের দিন ছিটমহলটিজুড়ে ইসরাইলি হামলায় ৭৭ জন নিহত হয়েছেন। উদ্ধারকারীরা যেতে না পারায় এখনো বহু মানুষ হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনের নিচে চাপা পড়েছেন। তাদের অনেকে মারা যেতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. হুসাম আবু সাফিয়াকে ইসরাইলের আটক করা গাজার স্বাস্থ্যসেবা খাতকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ বলে মনে করছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, বিশ্ব সংস্থা গাজার ২৭টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৩৬টি ইসরাইলি হামলা রেকর্ড করেছে। এতে ‘উল্লেখযোগ্য মৃত্যু ও ধ্বংস’ হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।
ইসরাইলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।
ইসরাইলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরাইলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরাইলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।
দখলদার দেশটির নিরলস হামলা এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৬৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ আট হাজার ৫৮৩ জন।