ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মিরে ৬.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সুড়ঙ্গ খুলে দিয়েছে ভারত। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই টানেলের উদ্বোধন করেন। কৌশলগত এই হিমালয় সড়ক সুড়ঙ্গটি চীন ও পাকিস্তান সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলে অবস্থিত। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার একটি কৌশলগত হিমালয় সড়ক সুড়ঙ্গের উদ্বোধন করেছেন। এই টানেলের মাধ্যমে চীন ও পাকিস্তানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সুউচ্চ সীমান্ত অঞ্চলের দিকে সকল আবহাওয়ায় চলাচলের সুযোগ পাবে নয়াদিল্লি। জেড-মোরহ বা সোনমার্গ টানেল নামের এই সুড়ঙ্গটি বছরে চার থেকে ছয় মাস তুষারে আবৃত থাকে এমন পর্বত গিরিপথের নিচে ৬.৪ কিমি প্রসারিত। মূলত সীমান্ত অঞ্চলে বিস্তৃত অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে এই টানেলটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া এই টানেলটি ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরকে লাদাখের সাথে সংযুক্ত করতেও সাহায্য করেছে। এর ফলে সারা বছর শ্রীনগর-লেহ হাইওয়ে খোলা রাখা সহজ হবে। ৩১৩ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পটি নির্মাণ সম্পন্ন করতে এক দশক সময় লেগেছে।
টানেল উদ্বোধনের সময় মোদি বলেন, “এখানে টানেলটি উন্মুক্ত করার সাথে সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হবে।” ভারত এবং চীন বিশ্বের দুটি সর্বাধিক জনবহুল দেশ। দেশ দুটি দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে কৌশলগত প্রভাব বিস্তারে তীব্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এছাড়া উভয় দেশের মধ্যকার ৩৫০০ কিমি দীর্ঘ সীমান্ত বহু বছর ধরেই উত্তেজনার উৎস হিসেবে রয়েছে।
২০২০ সালে দেশ দুটির সৈন্যরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং এতে কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় ও চারজন চীনা সৈন্য নিহত হয়। এছাড়া উভয় পক্ষের বাহিনী এখনও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সীমান্ত জুড়ে প্রায়ই একে অপরের মুখোমুখি হয়ে থাকে। যাইহোক বেইজিং এবং নয়াদিল্লি গত বছরের অক্টোবরে বিতর্কিত এলাকায় টহল দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়। এদিকে কাশ্মিরের একই রুটের আরেকটি টানেল নির্মাণ করছে ভারত। ১৩ কিমি দীর্ঘ জোজিলা টানেলের নির্মাণকাজ অর্ধেকেরও বেশি শেষ হয়েছে এবং সেটি ২০২৬ সালে খুলে দেওয়া হতে পারে বলে ভারতীয় তথ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে।
এছাড়া ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের সাথে নিম্নভূমিকে সংযুক্ত করার জন্য ৩.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেললাইনও নির্মাণ করেছে। যার অংশ হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ চেনাব রেল সেতুও নির্মাণ করা হয়েছে। ২৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর উত্তর কমান্ডের সদর দপ্তর উধমপুরের গ্যারিসন শহর থেকে শুরু হয়ে শ্রীনগরের মধ্য দিয়ে চলে গেছে।