ভারত অনড়। পাকিস্তানও অনড়। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি অবস্থানে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভবিষ্যৎ নিয়ে জটিলতা চরমে। টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়াতে আর দুই মাসের মতো সময় বাকি আছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দুইবার বৈঠকে বসলেও ভেন্যু নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা—আইসিসি। ভারতের পাকিস্তানে যেতে অনাগ্রহ এবং পাকিস্তানের হাইব্রিড মডেলে অনীহার কারণে সৃষ্টি হওয়া জটিলতায় পড়েছে বৈশ্বিক এই আসর। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (Champions Trophy 2025) নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে গত ২৯ নভেম্বর প্রথমবার বৈঠকে বসেছিল আইসিসি। কিন্তু মাত্র ১৫ মিনিটেরও কম সময়ের মাঝে বোর্ড সভা পণ্ড হয়ে যায়। জয় শাহ আইসিসির সভাপতি হওয়ার পর তার অধীনে গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রথম সভা হওয়ার কথা ছিল। যার জন্য বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি দুবাই আইসিসির কার্যালয়ে হাজির ছিলেন। কিন্তু স্থগিত হয়ে গেছে এবারের সভাও।

সূত্রের বরাতে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ বলছে, আগামী ৭ ডিসেম্বর পুনরায় সভায় বসবে আইসিসি। পাকিস্তানের অবস্থানের বিষয়ে ভারত প্রতিক্রিয়া না জানানোয় সভা করতে দেরী হচ্ছে। এদিকে, সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের বরাতে আরেকটি খবর সামনে এসেছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে জট কেটেছে বলেই সূত্রের খবর। আইসিসির এক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে, হাইব্রিড মডেল নিয়ে পাকিস্তানের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। পাক বোর্ডের দাবি ছিল, আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত যদি হাইব্রিড মডেলে খেলে তাহলে আগামী দিনে ভারতের আয়োজিত টুর্নামেন্টগুলোতে পাকিস্তানও হাইব্রিড মডেলে খেলবে। শোনা যাচ্ছে, পিসিবির এই দাবিতে সায় দিয়েছে বিসিসিআই। আইসিসির এক কর্মকর্তা বলছেন, সবপক্ষের সম্মতিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলা হবে পাকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে। ভারত দুবাইয়ে ম্যাচ খেলবে। আইসিসি মনে করছে এতে সব পক্ষের দাবিই মানা হলো।

প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হওয়ার কথা। পাকিস্তানে প্রতিযোগিতা না হলে নাম তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু তারা নিজেদের দাবি থেকে পিছিয়ে এসে হাইব্রিড মডেল মেনে নিচ্ছে। কিন্তু ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারতে খেলতে না গিয়ে তাদেরও হাইব্রিড মডেলে নিরপেক্ষ দেশে খেলা আয়োজনের সুযোগ দিতে হবে বলে দাবি করেছিল পিসিবি। কিন্তু সেটা ২০২৭ সাল পর্যন্ত মানা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ভারত নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করবে। এই নিয়ম মেনে ওই দু’টি প্রতিযোগিতায় পাকিস্তান ভারতে খেলতে আসবে না। ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের সঙ্গে আয়োজক দেশ হিসেবে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। ফলে পাকিস্তানের ম্যাচগুলো সে দেশে দেওয়া হতে পারে। মেয়েদের বিশ্বকাপে হয়তো পাকিস্তান অন্য কোনো নিরপেক্ষ দেশে ম্যাচগুলো খেলবে।

টুর্নামেন্ট শুরুর অন্তত ৯০ দিন আগে সূচি ঘোষণা করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। শনিবার যদি বৈঠক হয় সেখানে আইসিসি কী সিদ্ধান্ত নেয় সেই দিকে নজর থাকবে। সেই সঙ্গে সূচি ঘোষণা করা হয় কি না তাই নিয়েও আগ্রহ থাকবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *