জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে সম্প্রতি ওঠা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের তিনটি নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার শাস্তি হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংলাপে ডাকা হয়নি, এমন প্রচারণা জাতীয় পার্টির জন্য বিব্রতকর। জাতীয় পার্টির ওপর দোষ চাপানো অন্যায়।

শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকায় পল্লী নিবাস বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ৪০ বছরের পুরাতন দল। দেশের উন্নয়নে, সংস্কারে আমাদের ভূমিকা রয়েছে। রাষ্ট্রপরিচালনাতেও আমাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। বর্তমান সরকারকে আমরা প্রথম থেকে সহযোগিতা করার কথা বলে আসছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছি আর করেও যাবো। তারা পরামর্শ চাইলে দেবো, না চাইলে দেবোনা। কিন্তু এখন যেভাবে আমাদের দোষারোপ করা হচ্ছে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়।’

তিনি বলেন, ‘২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা স্বৈরাচারী সরকারকে সহযোগিতা করেছি এমন অভিযোগ করা হচ্ছে যা মোটেও সত্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন আমরা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ২৭০ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে আমরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলাম। আমি নিজে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলাম, আমাকে মন্ত্রী করতে চাওয়া হয়েছিলো আমি রাজি হইনি। আমার ভাই মরহুম এরশাদ নির্বাচন বর্জন করার কথা বললে তাকে জোর করে সিএমএইচে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি একমাত্র দল যারা সন্ত্রাসবাদ, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হাট দখল, জমি দখল, অবৈধ ব্যবসা, লুটপাটের সঙ্গে কখনও জড়িত ছিল না। বিএনপির আমলে আমরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছি আর আওয়ামী লীগের আমলে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। ষড়যন্ত্র মানে দল ভাগ করে দেওয়া, ক্ষমতা অন্যত্র চলে যাওয়া। আওয়ামী লীগ আমাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দলকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিল।’

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জি এম কাদের আরও বলেন, দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক হচ্ছে না। জিনিষপত্রের দাম আকাশচুম্বী। মুদ্রাস্ফ্রিতি বাড়ছে, বেকারত্ব বাড়ছে। মানুষ মিল-কারখানা চালাতে পারছে না, উপার্জন কমে যাচ্ছে। সরকারের সামনে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো, মানুষের নিরাপত্তা দেয়া, মুদ্রাস্ফিতি নিয়ন্ত্রণ করা ও বেকারত্ব দূর করা। এর সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতা তো কিছুটা আছেই।

এ সময় মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, জেলা সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক জাপা নেতা আজমল হোসেন লেবু, লোকমান আহাম্মেদসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *