ইতিবাচক হলো শেয়ারবাজার। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে ডিএসইর মূল্যসূচক বেড়েছে ১৪৭ পয়েন্ট এবং বাজারমূলধনে যোগ হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারের ব্যাপারে বেশ কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়াও বুধবার বিএসইসির কার্যালয়ে গিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বাজারের ব্যাপারে সরকার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। এতে বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হয়েছেন। এর ফলে নতুন করে কিছু বিনিয়োগ করেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে- ডিএসইতে বুধবার ৩৯৭টি কোম্পানির ২১ কোটি ৫৫ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ৫১৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এরমধ্যে দাম বেড়েছে ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ারের, কমেছে ১৫টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। দাম বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা (সার্কিট ব্রেকার) স্পর্শ করেছে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান। বুধবার লেনদেনের বেশিরভাগ সময় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির আদেশের ছিল প্রায় শূন্য। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে চায়নি। ডিএসইর ব্রড সূচক আগের দিনের চেয়ে বুধবার ১৪৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে ঠেকেছে। শতকরা হিসেবে যা প্রায় ৩ শতাংশ। বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ মূল্যসূচক বুধবার ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯১৫ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৩৬ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। ডিএসইর বাজারমূলধন আগের দিনের চেয়ে বেড়ে ৬ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারের ব্যাপারে বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বিএসইসি। মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সিদ্ধান্তগুলো হলো- তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে তহবিল জোগান, জরিমানার মাধ্যমে বিএসইসির আদায় করা অর্থ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজে লাগানো, সরকারি-বেসরকারি ভালো ও লাভজনক কোম্পানি দ্রুত বাজারে আনতে আইপিও আইন সংস্কার ও কর প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, বাজারে লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে একদিনে নামিয়ে আনা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনাদায়ী ঋণাত্মক ঋণ (নেগেটিভ ইক্যুইটি) রয়েছে চূড়ান্তভাবে সেগুলোর নিষ্পত্তি করা, উচ্চ সম্পদশালী ব্যক্তিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে মূলধনী মুনাফার করহার কমানো এবং শেয়ার পুনঃক্রয়ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ। বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
শীর্ষ দশ কোম্পানি: বুধবার ডিএসইতে যে সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে সেগুলো হলো- ব্র্যাক ব্যাংক, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ফারইস্ট নিটিং, বিট্রিশ আমেরিকান ট্যোবাকো, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ইবনেসিনা ফার্মা, এক্সিল্যাবরেটরিজ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ট্যাকনো ড্রাগ ও ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ। ডিএসইতে বুধবার যে সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হলো- সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, ফু-ওয়াং ফুড, জনতা ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু ফেব্রিক্স, নাভানা ফার্মা, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স। অন্যদিকে যে সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি কমেছে সেগুলো হলো- মিডল্যান্ড ব্যাংক, বিআইএফসি, নিউ লাইন ক্লথিং, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেসকো, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, খান ব্রাদার্স পিপি, স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক ও ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ।