পশ্চিমা বিশ্বের ব্যাপক সমালোচনার পরও আবার বেসামরিক নাগরিদের সামরিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত করেছে পাকিস্তান। এবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি দাবিতে সামরিক স্থাপনায় হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে ২ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির সামরিক আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
গত সপ্তাহে, একই অভিযোগে আরও ২৫ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছিল।
সেনাবাহিনীর আইএসপিআর মিডিয়া উইং বৃহস্পতিবার বলেছে, জাতি, সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনী ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখতে এবং রাষ্ট্রের অলঙ্ঘনীয় রিট বজায় রাখা নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে।
গত ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হন। তবে তিনি এর পেছনে দেশটির ক্ষমতাধর সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। এরপর গত বছরের মে মাসে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তোলা হয়।
ইমরান খানকে গ্রেফতারে গত বছর ৯ মে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে সামরিক স্থাপনায় ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়। এরপর দেশটির সামরিক আদালতে বেসামরিক ব্যক্তিদের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
এর কয়েকদিন আগে গত সোমবার, ইমরান খানের ২৫ জন সমর্থককে দুই থেকে ১০ বছরের মধ্যে কারাগারে পাঠানো হয়। এর ফলে ক্ষমতাধর সেনাবাহিনী সতর্ক করে বলেছে, কখনই আইন নিজের হাতে না নেওয়া যাবে না।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, এই সামরিক আদালতগুলোতে বিচারিক স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার গ্যারান্টি নেই।
এছাড়া সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক আদালতে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
আর মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ পদক্ষেপকে ভয় দেখানোর কৌশল বলে মন্তব্য করেছে। তাদের ভাষ্য, ভিন্নমত দমনের জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ বিষয়ে আরও কড়া সমালোচনা করে জানিয়েছে, এই সাজাগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের গ্রহণ করা দায়বদ্ধতার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী জানান, সামরিক আদালতের রায়গুলো ন্যায়বিচারের অধিকার লঙ্ঘন করে না। দণ্ডপ্রাপ্তরা আইনজীবী নিয়োগ, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সামরিক আদালত ও বেসামরিক উচ্চ আদালতে দুবার আপিল করার সুযোগ পান।