দীর্ঘ নাটকীয়তার পর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বিষয়ে এক মেরুতে এসেছে ভারত-পাকিস্তান। দুই দলই আগামী তিন বছর হাইব্রিড মডেলে সকল বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের সম্মতি দিয়েছে। ভারত সেটি মেনে নেওয়ায় পাকিস্তানও আসন্ন ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করছে এই মডেলে। যেখানে ভারতের ম্যাচগুলো হবে দুবাইয়ে। তবে পাকিস্তানকে ‘মূর্খ’ উল্লেখ করে, ভারত তাদের ‘ললিপপ ধরিয়ে দিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পাক তারকা দানেশ কানেরিয়া। সাবেক এই স্পিনারের যুক্তি অবশ্য অমূলক নয়, যেমনটা ভারতের হাইব্রিড মডেল মেনে নেওয়ার ঘোষণা আসার পরও আলোচনায় ছিল। তবে পাকিস্তান তাতে ভ্রুক্ষেপ না করেই তোলে তৃপ্তির ঢেকুর। অথচ ২০২৭ সালের আগে নারীদের ২০২৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক ভারত। এ ছাড়া ২০২৬ পুরুষ বিশ্বকাপ তারা আয়োজন করবে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে। অর্থাৎ, তেমন ক্ষতির মুখে পড়ছে না রোহিত-কোহলিদের দেশ। অন্যদিকে, মেয়েদের ২০২৮ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক পাকিস্তান।

পাকিস্তান ঠকে গেছে উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা ‘ইন্দো-এশিয়া নিউজ সার্ভিস’কে (আইএএনএস) দানেশ কানেরিয়া বলেন, ‘বিসিসিআই উইন-উইন পরিস্থিতিতে রয়েছে। আর পাকিস্তান? আমি তাদের অনেককে বলতে শুনেছি ‘‘আমরা লড়াই করেছি এবং জিতেছি।’’ কিন্তু তারা মূর্খ, তাদের মূলত নারী বিশ্বকাপ নামের ‘‘ললিপপ’’ ধরিয়ে দিয়েছে। আমি শুরু থেকেই অনুভব করছিলাম যে হাইব্রিড মডেলই একমাত্র সমাধান, কারণ চলমান অনিশ্চয়তায় এর কোনো বিকল্প নেই।’ সাবেক এই পাকিস্তানি স্পিনার আরও বলেন, ‘পাকিস্তান বলছে তারা ভারতে খেলতে যাবে না, কিন্তু সেটি কেবল সময় বলবে। দেশটি বর্তমানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে রয়েছে। যদি অন্য কোনো দলও একই দাবি (নিরপেক্ষ ভেন্যু) তোলে, তখন কী ঘটবে? পুরো টুর্নামেন্টই তো দুবাইয়ে সরিয়ে নিতে হবে। সবারই পারিবারিক উদ্বেগ আছে এবং আমাদের সেটিকে সম্মান দেখানো উচিৎ। এই মুহূর্তে আমরা কেবল এটাই আশা করব যে, হাইব্রিড মডেলে যেন টুর্নামেন্টটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।’ পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক হলেও, দুই দল ফাইনালে উঠলে ভারতের চাওয়ায় তাদেরও দুবাইয়ে খেলতে হবে। তখন নতুন করে ইস্যু তৈরি হতে পারে বলেও শঙ্কা কানেরিয়ার, ‘মজার বিষয় হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান উভয়ই ফাইনালে উঠলে তাদের দুবাইয়ে খেলতে হবে। তখন আরেকটি ইস্যু তৈরি হবে। যদি আপনি দুবাইয়ে ফাইনাল খেলতে যেতে পারেন, তাহলে ভারতে গিয়ে খেলতে কি সমস্যা? পাকিস্তানের উচিৎ এখন দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। প্রত্যেক দলই এখানে খেলতে যাচ্ছে, কোনো দল যাতে নতুন করে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।’ পাকিস্তানের হয়ে ১০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন দানেশ কানেরিয়া। যেখানে ৬১ টেস্টে ২৬১ এবং ১৮টি ওয়ানডেতে তিনি ১৫ উইকেট শিকার করেছেন। ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে সচরাচর ম্যাচ না খেললেও, বড় টুর্নামেন্টে তাদের লড়াই নিয়ে উন্মাদনার কমতি থাকে না ক্রিকেটবিশ্বে। এবারও তেমনই রোমাঞ্চ দেখা যাবে বলে প্রত্যাশা কানেরিয়ার। তার মতে–পাকিস্তানের মানুষরা রোহিত-কোহলি ও বুমরাহদের পছন্দ করে।

প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৯ মার্চ পর্দা নামবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির। ১৯ ফেব্রুয়ারি আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে আয়োজক পাকিস্তান। ম্যাচটি হবে করাচিতে। এ ছাড়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি। এই ম্যাচটি হবে নিরপেক্ষ ভেন্যু দুবাইয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *