কয়েক মাস ধরেই বাজারে সবজিসহ পেঁয়াজ, আলু ও ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বগতি। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে মূল্য নির্ধারণ করা হলেও ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। বরং নীতিনির্ধারকদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাড়তি দামেই বিক্রি করছেন তারা।

শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এদিন প্রতি কেজি নতুন আলু ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর পুরোনো আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। গত কয়েক মাস থেকেই আলু নিয়ে কারসাজি করছে অসাধু চক্র। তারা হুহু করে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার তদারকি জোরদারের পাশাপাশি আলু আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। কম শুল্কের আলু দেশের বাজারেও এসেছে। কিন্তু কমিশন বাণিজ্য সিন্ডিকেটের কারসাজিতে দাম অনেক বেশি।

সূত্র জানায়, ভারত থেকে আলু আমদানি করতে কেজিপ্রতি খরচ পড়ে ২১ থেকে ৩০ টাকা ৬০ পয়সা। পরিবহণ খরচ ও অন্যান্য খরচ এবং লাভসহ এই আলু ২৫ থেকে ২৮ টাকা বিক্রির কথা। আর পাইকারি হয়ে খুচরা পর্যায়ে একই আলু ভোক্তা পর্যায়ে ৩০-৩৫ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু সেই আলু ক্রেতা ৭৫ টাকা কেজি দরে কিনছেন। আর এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে আমদানিকারক ও ঢাকার শ্যামবাজারের আড়তদার সিন্ডিকেট।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে ক্রেতারা জিম্মি। এমনকি তারা সরকারের আদেশও মানছেন না। দেখা গেছে, দেশে যতবার পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, বিক্রেতারা সেটা কার্যকর না করে ক্রেতার কাছে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেছে। কিন্তু যেসব তদারকি সংস্থা এ মূল্য কার্যকর করবে, তারাও যেন অসাধুদের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে। ফলে ক্রেতারা কোনো প্রকার সুফল পাচ্ছেন না।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে ক্রেতারা জিম্মি। এমনকি তারা সরকারের আদেশও মানছেন না। দেখা গেছে, দেশে যতবার পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, বিক্রেতারা সেটা কার্যকর না করে ক্রেতার কাছে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেছে। কিন্তু যেসব তদারকি সংস্থা এ মূল্য কার্যকর করবে, তারাও যেন অসাধুদের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে। ফলে ক্রেতারা কোনো প্রকার সুফল পাচ্ছেন না।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছুটা দাম কমলেও খুচরা বাজারে দেশি ভালোমানের পেঁয়াজের কেজি ১১৫ থেকে ১২০, দেশি হাইব্রিডের কেজি ১১০ থেকে ১১৫ এবং ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ৯৮ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি বেগুন ৬০-৮০, করলা ৭০ থেকে ৯০, ঢ্যাঁড়শ ৬০, বরবটি ৭০, মুলা ৪০, লতি ৬০, ধুন্দুল ৬০ এবং পটোল ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৪০, গাজর ১৩০, কচুর মুখী ৮০, টমেটো ১২০ থেকে ১৪০, শিম ৮০ থেকে ১০০, শালগম ১১০ এবং শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।

নয়াবাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. আল আমিন জানান, বাজারে এলেই হাহাকার লাগে। সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। ফলে পরিবার নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজারে তদারকি সংস্থারাও কোনো প্রতিকার করতে পারছে না। যে কারণে ক্রেতাদের বাড়তি দামেই পণ্য কিনতে হচ্ছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় খুচরা পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪-৫ এবং পাম তেলে ৩-৪ টাকা কমেছে। শুক্রবার প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয় ১৬৫-১৬৮ টাকায়। পাশাপাশি প্রতি লিটার খোলা পাম তেল ১৫৭-১৫৯ টাকায় বিক্রি হয়। এদিকে দুই সপ্তাহ আগেও বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ সংকট তৈরি হয়। পরে সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করে। পরে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো বোতলজাত তেলের সরবরাহ বাড়ায়। তবে ফের তিন থেকে চারদিনে কোম্পানিগুলো সরবরাহ কমাচ্ছে। তাই খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি কমেছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বাজারে যে তদারকি করা হচ্ছে না, সেই তথ্য ঠিক নয়। অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে সপ্তাহের প্রতিদিন সারা দেশের বাজারে তদারকি করা হচ্ছে। অনিয়মের দায়ে আইনের আওতায় এনে জরিমানা করা হচ্ছে। তবে এবার অনিয়ম করলে জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *