বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শুরু থেকেই শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের মধ্যে যে কয়কজন ছাত্রদের পক্ষে সরব ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতাকে উদ্বুদ্ধ তার ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মত। যে কারণে আওয়ামী লীগের চক্ষুশূলেও পরিণত হয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুক একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। যেখানে তিনি দলটিকে কিছু সত্য মেনে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
রোববার রাতে এক স্ট্যাটাসে ফারুকী লিখেছেন, জামায়াতকে যেমন ৭১ (১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ) প্রশ্ন ডিল করতে হয়েছিল, এমনকি এখনও হচ্ছে। আওয়ামী লীগকেও ২৪ এবং তার আগের ১৬ বছর নিয়ে প্রশ্ন ডিল করতে হবে। এই সত্যটা আওয়ামী লীগ যতো দ্রুত বুঝবে ততোই তাদের এবং দেশের মঙ্গল।
এরপর বিগত সরকারের বিভিন্ন অন্যায়, অনৈতিক কাণ্ডের কথা উল্লেখ করে এই নির্মাতা বলেন, ‘আপনি ভাব করবেন, জুলাইয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ মারেন নাই, ১৬ বছর ধরে গুমের সংস্কৃতি কায়েম করেন নাই, নিজের ক্যাশিয়ার দিয়ে ব্যাংক লুটপাট করেন নাই, বিচার-নির্বাহী-পুলিশ বাহিনী ধ্বংস করে দেন নাই, এমনকি সেনাবাহিনীর ভেতরে জিয়াউল আহসানের মতো নির্যাতনের টুল বানান নাই, সেটা হবে না। এতো এতো প্রমাণের যুগে অস্বীকার করাটা ব্র্যান্ড ইমেজ রক্ষা করার কোনো উপায় না।
এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ফারুকী বলেন, আর ফোনে এইসব হুমকি-ধামকি যে তার খুনি ইমেজটাই বড় করে তুলতেছে, এইটা বলার মতো লোকও পাশে নাই দেখে বুঝলাম কিভাবে সে মনস্টার হয়ে উঠলো।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি শেখ হাসিনার পরপর কয়েকটি কলরেকর্ড ফাঁস হয়েছে। যেখানে তিনি দেশে ফেরার কথা বলেছেন। আবার কখনো অন্তবর্তীকালীন সরকার, বিএনপি-জামায়াত নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন। ফারুকী সেসবের জবাবেই ফোনে হুমকি-ধামকির প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন।
এর আগে এক স্ট্যাটাসে ১৯৯১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধের ন্যারেটিভ যে আর দোয়ানো যাচ্ছে না, এর কারণ হচ্ছে জনগণ দেখতে পাচ্ছে একাত্তরের আগে আইয়ুব খানের পান্ডা সংগঠন এনএসএফ যে ভূমিকায় ছিল, এই সময়ে ছাত্রলীগ চলে গেছে সেই ভুমিকায়। একাত্তরের জামায়াতের ভূমিকায় চলে গেছে আওয়ামী লীগ। যে দলটা একাত্তরে ছিলো জনগণের পক্ষে, এই সময়ে এসে তাদের অবস্থান বিপরীত দিকে।