যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা প্রদেশে নদীগুলোতে পানির রং এখন কমলা। রাজ্যের ৭৫টির বেশি নদীর পানিতে এই পরিবর্তন এসেছে। গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এটি ঘটছে। গ্রামীণ জনপদে এ পানির ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে বলেও তাদের আশঙ্কা। খবর- ওয়াশিংটন পোস্ট।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ ও ন্যাশনাল পার্ক সিস্টেম এ নিয়ে সম্প্রতি যৌথ গবেষণা করেছে। তাতে বলা হয়েছে, নদীর পানিতে রাসায়নিক উপাদানযুক্ত স্রোত মিশে পানির রং পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।

গবেষকদের একজন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক ব্রেট পলিন। তিনি বলেছেন, নদীর পানির এই পরিবর্তন জলজ স্বাস্থ্য ও গ্রামীণ জনপদে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। নদীর পানির পরিবর্তনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গবেষকরা। তারা মনে করেন, পানির রং পরিবর্তনের মূল কারণ চিহ্নিত করতে হলে স্রোতের উৎপত্তি, পানির গুণমান ও বাস্তুসংস্থানের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। মাটি থেকে সালফাইড ও অম্ল খনিজ উপাদান পানিতে মিশে যাচ্ছে। আর তা অক্সিজেনের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া ঘটিয়ে পানির রং পরিবর্তন করে ফেলছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্ট। এটি রাজ্যের খাবার পানির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু স্রোতে লেবুর রসের মতো অম্লীয় উপাদান রয়েছে। আবার কয়েকটি নদীর পানি তীব্র গরম। মাটি থেকে গলিত ধাতব এর কারণ হতে পারে। তবে মাছ মরে যাচ্ছে এমন চিত্র চোখে পড়েনি।

আলাস্কা রাজ্যের নির্বাহী পরিচালক টিম ব্রিস্টলের আশঙ্কা, নদীর পানির এই পরিবর্তন রাজ্যের মৎস্য শিল্পে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।

তবে গবেষকরা যে এলাকাটি পর্যবেক্ষণ করেন সেই এলাকায় কোনো মাছের উপস্থিতি পাননি। তাছাড়া জলজ খাদ্যচক্রে ত্রুটি লক্ষ্য করা গেছে। শৈবালের ঘনত্বও কম দেখা গেছে। এই সমস্যা রাজ্যের জন্য খারাপ পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে। টিম ব্রিস্টল মনে করেন, এই সমস্যা সমাধানে আগামী কয়েক বছরের করণীয় ঠিক করা জরুরি। তবে এর সমাধান আসলে কোন পথে তা আমাদের জানা নেই।

নদীর পানির এই পরিবর্তনের ঘটনায় জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক বার্তা দিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা শঙ্কিতও। তারা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আতংকিত। উডওয়েল ক্লাইমেট রিসার্চ সেন্টারের আর্কটিক বিজ্ঞানী স্কট জোলকোস বলেন, আলাস্কা এমন একটি অঞ্চল যেটি পৃথিবীর বাকি অংশের তুলনায় অন্তত দুই থেকে তিন গুণ বেশি দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়ছে নদীর পানির ওপর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *