সদ্যসমাপ্ত নারী লিগে কিছু ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু ইনজুরি থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় দেশের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড এবং বাংলাদেশকে প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়ন করানোয় বিশাল ভূমিকা রাখা কৃষ্ণা রানী সরকারকে চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে ঘোষিত দলে রাখেননি বৃটিশ কোচ পিটার বার্টলার।

ইনজুরির কারণে জাতীয় দলে ডাক না পাওয়ার পর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বিপক্ষে সুচিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ এনেছেন টাঙ্গাইলের এ ফুটবলার।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাতে নিজের ফেসবুকে বিশাল স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের কষ্ট ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই তারকা ফুটবলার। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা কৃষ্ণাকে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কৃষ্ণা সেটা জানালেও বাফুফে কোনো গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

কৃষ্ণা রানী সরকারের ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো।

‘২০২২ এ সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে ইঞ্জুরিতে পরি। প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে। পা আগের থেকে ভালো। কিন্তু এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি। প্র্যাকটিস করলেই ব্যথা হয়। বাফুফের ফিজিও দিয়ে আমার ট্রিটমেন্ট চলছে। সবাই জানে ইনজুরিটা অনেক রেয়ার। ব্যথা নিয়েই প্র্যাকটিস করতেছি। দেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেকদিন দেখেন, যখন ব্যথা কমতে ছিল না। স্যার বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া, ইন্ডিয়া গিয়ে ট্রিটমেন্ট করাতে। কিন্তু যখন আমি বাফুফেকে জানাই, ওনারা বলেন আরও কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেকদিন তাদের ইন্ডিয়াতে যাওয়ার কথা বলছি। কিন্তু ওনারা আমার কথায় কোনো গুরুত্ব দেননি। আজ পর্যন্ত ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি।’

‘২০১৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ দলে সুযোগ পাই এবং ২০১৪ সালে সিনিয়ার জাতীয় দলে সুযোগ পাই। সেখান থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কখনো কোনো দলের বাইরে থাকিনি। প্রায় ১০ বছর একটানা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছি। টুকটাক ইনজুরিতে পড়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে এত বড় ইনজুরিতে পড়বো কখনো ভাবিনি। অনেকদিন রেস্টে থাকার পর আর ভালো লাগছিল না এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলাম। তাই ব্যথা নিয়ে প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি। চায়নাতে যখন এশিয়ান গেমস খেলতে যাই, তিনটা ম্যাচ বেঞ্চে বসে কাটিয়েছি। ব্যাক টু ব্যাক দুইটা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে গেলাম। একজন প্লেয়ার হিসেবে এইটা মেনে নেওয়া খুব দুঃখজনক।’

কৃষ্ণা আরও লিখেছেন, ‘কষ্ট একটাই, কখনো কোনো টিমমেট, প্লেয়ার বা কোচকে বলতে দেখলাম না কৃষ্ণা ইনজুরিতে, তাকে তাড়াতাড়ি ট্রিটমেন্ট করানো হোক। কারও কোনো মাথাব্যথাই নেই। ১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমেষে শেষ। অনেক প্লেয়ারকে দেখেছি এভাবে হারিয়ে যেতে। মনে হয় সেই দিনটা আর বেশিদিন নেই কৃষ্ণার জন্য। সবাই আমার জন্য আশীর্বাদ এবং দোয়া করবেন। যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পরি। আবার আগের মতো মাঠে ফিরতে পারি।’

‘[বি. দ্র. মনের কিছু কথা শেয়ার করলাম। কারও কোনো খারাপ লাগলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *