ফুটবলের অবিচ্ছেদ্য ও অন্যতম প্রধান অংশ রেফারি। বাংলাদেশে অবশ্য রেফারিরা অনেক ক্ষেত্রেই থাকেন অবহেলিত। ম্যাচ পরিচালনা ফি যেমন কম তেমনি সেই স্বল্প সম্মানীও থাকে বছরের পর বছর বকেয়া। ঘরোয়া ফুটবলের নতুন মৌসুম শুরুর আগে বাফুফের প্যানেলভুক্ত ২৭ জন রেফারি ফেডারেশনের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল বরাবর চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে তারা সম্মানী ও আনুষাঙ্গিক ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে একটি ম্যাচে রেফারি ৪ হাজার, দুই সহকারী রেফারি ৩৮০০ টাকা ও চতুর্থ রেফারি ৩৫০০ টাকা সম্মানী পেয়ে থাকেন। নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়ালকে দেয়া চিঠিতে দুই হাজার করে বেশি দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। ম্যাচ ফি ছাড়াও রেফারিদের ম্যাচ পরিচালনার সময় দৈনিক ভাতা প্রদান করা হয়। সেই ভাতা ১৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজারে উন্নীত করার দাবি করেছেন রেফারিরা। গত কয়েক মৌসুম ধরে প্রিমিয়ার লিগ, ফেডারেশন কাপের ম্যাচগুলো ঢাকার বাইরেই বেশি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভেন্যু ভেদে রেফারিরা যাতায়াত ভাড়া বাবদ ১-২ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। এ খাতে ভেন্যু ভেদে আরো ৫০০ টাকা করে বৃদ্ধির প্রস্তাবনা রয়েছে।

নতুন মৌসুম শুরুর পর্বে সভাপতিকে রেফারিদের দাবি বিবেচনার অনুরোধ করা হয়েছে। গতকাল বসুন্ধরা কিংস-মোহামেডান ম্যাচ দিয়ে ইতোমধ্যে ঘরোয়া ফুটবলে নতুন মৌসুমের যাত্রা শুরু হয়েছে। সামনের শুক্রবার প্রিমিয়ার লিগের মাধ্যমে মূলত পুরোদমে ব্যস্ত সূচিতে থাকবে দেশীয় ফুটবল। ১৮ নভেম্বর রেফারিরা সভাপতিকে চিঠি দিলেও এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। বাফুফের স্ট্যান্ডিং কমিটির মধ্যে অন্যতম রেফারি। নির্বাচনের পর বেশ কয়েকটি কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হলেও রেফারিজ কমিটির চেয়ারম্যান ঠিক হয়নি। লিগ, টুর্নামেন্ট শুরু হলে কোন ম্যাচে কোন রেফারি বরাদ্দ দেয়া হবে এটা খুবই সংবেদনশীল কাজ। এখনো চেয়ারম্যান মনোনীত না হওয়ায় ম্যাচে রেফারি বরাদ্দের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও প্রভাবের প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। রেফারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও বাংলাদেশে এখনো পূর্ণাঙ্গ পেশাদার রেফারি নেই। বাংলাদেশের রেফারিদের কেউ শিক্ষকতা, কেউ ব্যবসা, অন্য চাকুরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেই পেশাগত দায়িত্ব পালনের পর নিজের তাগিদে ফিট থেকে অনেক ক্ষেত্রে অর্থ খরচ ফুটবল ম্যাচ পরিচালনা করেন। সেই সম্মানী যখন বকেয়া থাকে তখনই রেফারিরা ফুটবল বিমুখী হতে বাধ্য হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *