ভারতকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ বা (এমএফএন) তকমা বাতিল করেছে সুইজারল্যান্ড। এরফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুসারে, একটি দেশ যদি অন্য কোনো দেশকে এমএফএন মর্যাদা দেয়, তাহলে সেই দেশের প্রতি শুল্ক ও বাণিজ্য নীতি সম্পর্কিত বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ ভারতের পণ্য রপ্তানি ও দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এমএফএন ধারা অনুযায়ী, ভারত ও কোনো তৃতীয় ওইসিডি (অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) দেশের মধ্যে লভ্যাংশ, সুদ, রয়্যালটি বা প্রযুক্তি সেবার ফি-র ওপর কম করের হার প্রযোজ্য হলে, তা সুইজারল্যান্ড ও ভারতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
তবে এ ক্ষেত্রে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ওই মামলায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নেসলে একটি পক্ষ ছিল। ভারতীয় শীর্ষ আদালত জানান, ভারতীয় আয়কর আইনের ৯০(১) ধারা অনুযায়ী একটি প্রজ্ঞাপন ছাড়া এমন ‘দ্বৈত কর নিরসন চুক্তি’ কার্যকর হবে না।
এরপর সুইস ফাইন্যান্স বিভাগ বুধবার জানায়, এই রায়ের ফলে ভারতকে দেওয়া এমএফএন তকমা কোনো প্রজ্ঞাপন ছাড়া সরাসরি প্রযোজ্য হবে না। তাই আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে একতরফা প্রয়োগ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে সুইজারল্যান্ডে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য উৎসে কর হার আবারও ১০ শতাংশ হবে। এর আগে ২০২১ সালে এই হার ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল।
শুক্রবার সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে সুইস সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, আমার ধারণা, ইফটা (ইউরোপীয় মুক্ত বাণিজ্য সমিতি)-র কারণে আমাদের দ্বৈত কর নিরসন চুক্তি পুনরায় আলোচনা করা হবে। এটি একটি দিক। অন্যটি হলো ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’। এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো আপডেট নেই। আমরা পরে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাব।