প্রায় দুই হাজার ১০০ কোটি ডলারের মার্কিন পণ্য আমদানির ওপর ১০ থেকে ১৫ ভাগ নতুন শুল্ক আরোপ করেছে চীন। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনা পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রতিবাদে চীন এ ঘোষণা দিয়েছে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা আবারো বাড়তে শুরু করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্প্রতি চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০% শুল্ক আরোপ করেন। ফেব্রুয়ারির ১০ ভাগসহ ৪ মার্চ থেকে চীনা পণ্য আমদানির ওপর ২০ ভাগ শুল্ক কার্যকর হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, চীন মাদক পাচার রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর প্রতিক্রিয়ায় চীন মার্কিন কৃষি ও খাদ্যপণ্যের ওপর নতুন শুল্ক বসিয়েছে। ২৫টি মার্কিন কোম্পানির বিরুদ্ধে রপ্তানি ও বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। চীন মুরগির মাংস, গম, ভুট্টা ও তুলার ওপর ১৫% শুল্ক আরোপ করেছে। আর সয়াবিন, সরগাম বা জোয়ার, গরুর মাংস, শূকরের মাংস, ফল, শাকসবজি ও দুগ্ধজাত পণ্যের ওপর ১০% শুল্ক আরোপ করেছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা কখনোই কোনো প্রকার হুমকি বা চাপের কাছে নতিস্বীকার করবে না। চীন এই শুল্ক আরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাকমেইল নীতি বলে মনে করছে।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন এখনো আলোচনার দরজা খোলা রেখেছে। অর্থনৈতিক প্রভাব এই বাণিজ্য যুদ্ধ মার্কিন কৃষকদের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে, কারণ চীন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম কৃষিপণ্য বাজার। এমনিতেই চীনের বাজারে মার্কিন কৃষিপণ্যের আমদানি কমেছে।

যেমন, ২০২৪ সালে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই হাজার ৯২৫ কোটি ডলারের কৃষিপণ্য আমদানি করেছিল, যা ২০২২ সালে ছিল চার হাজার ২৮০ কোটি ডলার।

ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি দুই দেশ আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় না পৌঁছায়, তবে এই শুল্ক হার ৬০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রভাব পড়বে এবং মার্কিন কৃষকদের জন্য বিকল্প বাজার খোঁজার প্রয়োজন হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের এই নতুন অধ্যায় উভয় দেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও চীন আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছানোর ইঙ্গিত দিয়েছে, তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *