দেশে বন্যার কারণে বর্তমান বাজারে সবজি ও খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, ফলে যতটা ভয়বহ হওয়ার কথা তার চেয়ে কম আছে। সামনে আরও কমে আসবে। আমাদের লক্ষ্য আগামী জুনের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা। এটা কমিয়ে আনতে পারলে ব্যাংকের সুদ ও নীতি সুদহার কমিয়ে আনব বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য আগামী অর্থবছরের মধ্যে ৫ শতাংশে নামানো। আর মূল লক্ষ্য মুদ্রাস্ফীতি ৪-৫ শতাংশে নামিয়ে আনা। আশা করি তা সম্ভব।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ‘টিপিং পয়েন্টস অব রিফর্ম অ্যাজেন্ডা ফর দ্যা টার্নঅ্যারাউন্ড অব দ্যা ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক ন্যাশনাল ডায়লগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. আখতারুজ্জামান। গভর্নর বলনে, অর্থনীতির চারটা স্তম্ভ ব্যাংকিং, স্টক মার্কেট, ইন্স্যুরেন্স, বন্ড মার্কেট কোনোটাই আমাদের দেশে শক্তিশালী নয়। নানা উদ্যোগের পরেও বন্ড মার্কেট গড়েই তুলতে পারিনি। ইন্স্যুরেন্স আর স্টক মার্কেটের অবস্থা করুণ। ফলে একমাত্র ব্যাংকিং খাতকেই আমাদের দেশে বড় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি উৎস বের করতে না পারলে আমাদের ব্যাংকিং খাতের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বের হতে পারব না। তবে যেকোন উপায় বের করে ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। তিনি বলেন, দেশে তারল্য সংকট চলছে। সেজন্য টাকাও নাই। রিজর্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভ এখন কমতে কমতে ২৪ বিলিয়নে নেমেছে। অর্থাৎ বাকিটা বাইরে চলে গেছে। আমরা যদি আমানত বাড়াতে না পারি, টাকা বাইরে চলে যায়; তাহলে ব্যাংক ও অর্থনৈতিক খাতের প্রবৃদ্ধি হবে না। এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করার জন্য অর্থ পাচার বন্ধ করতে হবে।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা টাকা ছাপিয়ে কয়েকটি দুর্বল ব্যাংকে সহায়তা করছি। সেটা গ্রাহকের আস্থা ফেরানোর জন্য করা হচ্ছে। তবে বন্ড, বিলের মাধ্যমে টাকা দ্রুত সময়ে তোলা হবে। এতে গ্রাহকও টাকা পেল এবং বাজার থেকে বাড়তি টাতা তুলে নেওয়া হলো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার এবং ড. হাবিবুর রহমান, বিআইবিএম এর অধ্যাপক (সিলেকশন গ্রেড) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ছিদ্দিকী, বিআইবিএম-এর অধ্যাপক (সিলেকশন গ্রেড) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী, বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ও পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন এবং কন্সালটেন্সি) মো. শিহাব উদ্দিন খান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *