হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পরও লেবাননে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। দেশটির এ হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ১০৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও সাড়ে তিন শতাধিক মানুষ। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলের অবিরাম হামলার কারণে আরও একটি রক্তাক্ত দিনের স্বাক্ষী হয়েছে লেবানন। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, নিরলস ইসরাইলি বোমাবর্ষণে সারাদেশে কমপক্ষে ১০৫ জন নিহত এবং আরও ৩৫৯ জন আহত হয়েছেন।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণ সিডনের কাছে আইন আল-দেলবে একটি হামলায় দুটি আবাসিক ভবনকে সম্পূর্ণ গুড়িয়ে গেছে এবং এতে ৩২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ঘটনাস্থলে আশ্রয় নেওয়া অনেক বাস্তুচ্যুত পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।
লেবাননের বেশ কিছু রাজনীতিবিদ এই হামলাকে ‘গণহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু ইসরাইল বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর কয়েক ডজন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। তবে লেবাননের কর্মকর্তারা বলেছেন, দক্ষিণ লেবানন, বেকা, বালবেক-হারমেল গভর্নরেট এবং বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে বাড়িঘরের পাশাপাশি অন্যান্য ভবনগুলোতে হামলা করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার ভোররাতে স্থানীয় মিডিয়া আউটলেটগুলো বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে কোলা ব্রিজ এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলার খবর দিয়েছে। গত বছর সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে শহর সীমানার মধ্যে এটিই ইসরাইলের প্রথম আক্রমণ এবং সম্ভবত এটিকে সংঘাতের আরেক ধাপ বৃদ্ধি হিসাবে দেখা হবে।
লেবাননের রাজধানীকে আগে ইসরাইলি আক্রমণ থেকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে দেখা হতো। তবে সরাসরি বৈরুত শহরে বোমা হামলার ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে দেশের অন্যান্য অংশের মতো বর্তমানে রাজধানী শহরও ইসরাইলি হামলার অধীনে রয়েছে। হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে লেবাননের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
এর আগে বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে ইসরাইল হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে বিমান হামলায় হত্যা করে। আর রোববার ইসরাইলি সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহর সিনিয়র রাজনৈতিক কর্মকর্তা শেখ নাবিল কাউককেও হত্যা করেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, ইসরাইলের এ হামলার কারণে লেবানন থেকে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ সিরিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে।
সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্দি এক এক্স পোস্টে জানান, হামলার কারণে লেবাননের অভ্যন্তরেও দুই লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। লেবানন ও সিরিয়া সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম চলছে।