আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে বুধবারও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সায়েন্স ল্যাব মোড় ৬ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এতে এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের সড়কে দেখা দেয় তীব্র যানজট। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকরা। এদিন এক বিবৃতিতে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানালেও তারা প্রত্যাখ্যান করেন। ৩ নভেম্বর অনশন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তারা সড়ক ছাড়েন।

বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা ছয় ঘণ্টা সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এতে এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং মিরপুর সড়কসহ আশপাশের সড়কগুলোয় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বিকাল ৫টায় সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী আজম খান। এরপর তারা সায়েন্স ল্যাব মোড় ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজম খান বলেন, বৈষম্য দূর করে সাত কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাই একমাত্র সমাধান। আমরা আমলাতান্ত্রিক সংস্কার কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের দাবিÑশিক্ষাবিদ, গবেষক, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ‘স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন’ গঠন করা হোক। শিক্ষা উপদেষ্টার উদ্দেশে আজম খান বলেন, আপনি একজন শিক্ষাবিদ। আপনি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মূল্যায়ন করবেন। দীর্ঘ সাত বছরের বৈষম্য দূর করবেন এবং আমাদের দাবি পূরণ করবেন। এ সময় ৩ নভেম্বর বেলা ১১টা থেকে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে অনশন এবং শান্তিপূর্ণ ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ২ নভেম্বর অনলাইন প্ল্যাটফরমে সব কলেজের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করবেন তারা।

এছাড়া তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে মহাখালীর আমতলীতে মিছিল ও রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করেছেন।

এদিকে দুপুরে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরতে অনুরোধ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এরই মধ্যে সমস্যা নিরসনে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলেই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।

উপদেষ্টা আরও বলেন, সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন ও আলটিমেটামের মাধ্যমে কোনো নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার নজির নেই। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র এবং বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে। একটি সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল অবস্থায় পাওয়া শিক্ষা খাতে শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। এসব দাবিদাওয়ার মধ্যে ন্যায্য-অন্যায্য এবং কিছু ক্ষেত্রে পরস্পরবিরোধী দাবিও আছে। একটি বৈষম্যবিরোধী দাবি মানলে অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হতে পারে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *