সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত সব ক্যাচের জন্য আলোচনায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট বিগ ব্যাশ। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই প্রতিযোগিতায় দারুণ সব ফিল্ডিংয়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে আলোচনায় রয়েছে। কিন্তু এবার একটি ক্যাচ ধরতে গিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে দুই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারের। ভয়াবহ আঘাত পেয়েছেন দুজনই, এর মধ্যে একজনের তো নাক ভেঙেছে–ই, কাঁধও সরে গেছে। গতকাল (শুক্রবার) পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে বিগ ব্যাশের ম্যাচে মুখোমুখি হয় সিডনি থান্ডার্স ও পার্থ স্কর্চার্স। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ক্যাচ ধরতে গিয়ে মারাত্মক আঘাত পান সিডনির ব্যাটার ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও পেসার ড্যানিয়েল স্যামস। এর মধ্যে ব্যানক্রফটের নাক–কাঁধ দুটোই ভেঙেছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো। বিগ ব্যাশের চলতি আসর, এমনকি এ বছর ঘরোয়া সব প্রতিযোগিতা থেকেই তিনি ছিটকে গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, পেস অলরাউন্ডার ড্যানিয়েল স্যামের অবস্থা তুলনামূলক ভালো হলেও তাকে কমপক্ষে ১২ দিন মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে। ম্যাচে দুজন মারাত্মক আহত হওয়ার পর উভয়কেই কনকাশন সাব করে দুজনকে বদলি নামানো হয়। মাঠেই স্যাম ও ব্যানক্রফট রক্তাক্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে শুয়ে। পরে পার্থ হাসপাতালে রাতেও ভর্তি ছিলেন দুজনেই। তাদের সর্বশেষ আপডেট জানিয়েছেন সিডনি থান্ডারের জেনারেল ম্যানেজার ট্রেন্ট কোপল্যান্ড। তিনি বলছেন, ‘ক্যামেরন তার পরিবারের সঙ্গে পার্থেই অবস্থান করছে, এ ছাড়া টিম স্টাফরাও আছেন হাসপাতালে। ধারণা করা হচ্ছে– বিবিএলের (বিগ ব্যাশ) বাকি অংশে সে আর খেলতে পারবে না। ড্যান স্যামসের অবশ্য অতটা সমস্যা নেই, তার স্ত্রীকেও বাড়ি থেকে আনা হয়েছে। তাদের স্বার্থে ব্রিসবেনে দলের সঙ্গে পুরো স্টাফ যাচ্ছে না। আগামীকাল রাতে আমাদের পরবর্তী ম্যাচ ব্রিসবেন হিটের সঙ্গে। তবে ইনজুরড ক্রিকেটারদের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আশা করি দুয়েকদিনের মধ্যে আমরা ভালো সংবাদ পাব।’ এর আগে প্রতিপক্ষ পার্থের পুরো সময়ে আন্তরিক সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে সিডনি কর্মকর্তা বলেন, ‘দুই ক্রিকেটারের দারুণ স্পিরিট, বছর শেষেও তাদের (পারফরম্যান্স) খুব ভালো ছিল। মাঠে পার্থের (প্রতিপক্ষ) মেডিক্যাল স্টাফ এবং হাসপাতালে দায়িত্বরতদের সহায়তা ছিল দুর্দান্ত। রাতভর তারা দুই ক্রিকেটারকে পর্যাপ্ত সেবা দিয়েছে। থান্ডার ফ্যামেলি ও আহত দুই ক্রিকেটারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। এ ছাড়া আমাদের দুই ক্রিকেটার ও তাদের পরিবারকে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাব।’ এদিকে, ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ১৬তম ওভারে ঘটে সেই দুর্ঘটনা। সিডনির লকি ফার্গুসনের বলে লেগসাইডে উড়িয়ে মারলে ক্যাচ ধরতে একসঙ্গে দৌড়ে যান ব্যানক্রফট ও স্যামস। দুজনেরই গতি বেশি হওয়ার পাশাপাশি নজর বলের দিকে থাকায় পরস্পরের মাথায় সংঘর্ষ হয়। পরবর্তীতে মাঠেই আনা হয় মিনি অ্যাম্বুলেন্স। ফলে খেলা বন্ধ ছিল প্রায় ২০ মিনিট। শেষ পর্যন্ত নাটকীয় সেই ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয় একেবারে চূড়ান্ত বলে। পার্থের দেওয়া ১৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শেরফান রাদারফোর্ড শেষ বলে চার মেরে সিডনির জয় নিশ্চিত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *