সর্বাঙ্গে ব্যথা, ঔষধ দেবো কোথা’, টিম বাংলাদেশের অবস্থা এখন যেন তাই। ওপেনিংয়ে লিটন দাস একদমই ফর্মে নেই। তার ব্যাট একদমই কথা বলছে না। অপর ওপেনার সৌম্য সরকারও যে খুব ভালো অবস্থায় আছেন তাও বলার উপায় নেই। ব্যাটিং লাইনআপের প্রায় সব জায়গায়ই দুর্বল।

অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অবস্থাও বিশেষ ভালো না। তাকে নিয়েও এখন অনেক কথা। কেউ কেউ বলছেন তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক হওয়ার পর নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটিং ফর্ম খারাপ হয়েছে।

আসুন দেখি পরিসংখ্যান কী বলে। অধিনায়ক হওয়ার আগে শান্তর টেস্ট গড় ছিল ২৯.৮৩। আর ক্যাপ্টেন্সি করা চার টেস্টে শান্তর গড় কমে নেমেছে ২৪.৭৫’এ। ওয়ানডেতে অবশ্য চিত্র ভিন্ন। অধিনায়ক হওয়ার পর শান্ত আরও ভালো খেলেছেন। অধিনায়ক হওয়ার আগে এ বাঁহাতি টপ অর্ডারের গড় ছিল ২৯.৪৪।

আর এখন অধিনায়ক হওয়ার পরের গড় ৫২.০০। অধিনায়ক হওয়ার আগে স্ট্রাইকরেট ছিল ৭৮.২৬। আর অধিনায়ক হওয়ার পরে স্ট্রাইকরেট বেড়ে হয়েছে ৯২.১৫।

তবে বেশি খারাপ হয়েছে টি-টোয়েন্টি ফর্ম। টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে শান্তর ব্যাট যেন একদমই কথা বলছে না। ১৪ খেলায় একটিমাত্র ফিফটি। রান মোটে ২৩০। গড় ও স্ট্রাইকরেট দুই-ই অধিনায়ক হওয়ার আগের চেয়ে কমেছে। চারবার আউট হয়েছেন দু অংকে পৌঁছানোর আগেই।

একে তো রান নেই, তারওপর স্ট্রাইকরেট খুব খারাপ। শেষ চার খেলায় জিম্বাবুয়ের সঙ্গে এক ম্যাচে ১২৮.৫৭ স্ট্রাইকরেটে ৩৬ রানের ইনিংসটি বাদে দুবার আউট হয়েছেন ২৮.৫৭ ও ২৭.২৭ স্ট্রাইকরেটে।

এরকম খারাপ ফর্ম নিয়ে বিশ্বকাপের মতো মহাআসরে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে শান্ত কী করবেন? কতটা সফল হবেন? তা নিয়ে জেগেছে সংশয়।

তবে শান্ত ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে যে দলের হয়ে খেলেন, সেই চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হেড কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন এ কঠিন সংকটে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।

খালেদ মাহমুদ সুজন কিছুতেই মানতে চান না যে অধিনায়কত্বর চাপে ব্যাটিং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শান্তর।

সুজনের ব্যাখ্যা, আমার মনে হয় শান্ত চাপ নেওয়ার মতো ছেলে। আমি ওকে যতদূর চিনি ও চাপ নিতে পারে। কারণ নিজের ওপর যথেষ্ট বিশ্বাস আছে তার। অসম্ভব পরিশ্রমী এক ছেলে শান্ত। মানছি ব্যাটিং পারফরমেন্স খারাপ হচ্ছে, ধারাবাহিকতা কমে গেছে।

সুজনের পরামর্শ, কোচের উচিত শান্তকে আরও ফ্রিডম নিয়ে ব্যাটিং করতে দেওয়া। আমি জানি না কোচ তাকে কতটা ফ্রিডম দেন। তবে আমার মনে হয় শান্তকে আরও স্বাধীনভাবে নিজের মতো করে ব্যাট করতে দেওয়া উচিত। শান্ত আমার চোখে প্রেসারে ভালো খেলে। এখন কেন পারছে না, আমি জানি না।

স্ট্রাইকরেট নিয়ে না ভেবে শান্তকে তার নিজের মতো করে খেলার পরামর্শ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও টিম ডিরেক্টর সুজনের।

তিনি বলেন, আমি শান্তকে বলেছি, স্ট্রাইকরেট যে ১৪০ হতে হবে সেটা লেখা নেই কোথাও। টিমের সবাই মেরে খেলে, তানজিদ তামিম মারে, সৌম্য মারে, সাকিব মারে, হৃদয় মারে। একজন তো লাগবে যে ট্রু ব্যাটিং করবে। একটু ধরে এবং রয়ে সয়ে খেলবে। এখন ও যদি ৫ বা ৭ নম্বরে নামে বা ১২ নম্বর ওভারেও নামে, সেখান থেকে তার ইনিংসের শেষবল পর্যন্ত খেলা উচিত। আমি মনে করি শান্তরই ম্যাচ বা ইনিংস শেষ করে আসা উচিত। আমি জানি ওর সামর্থ্য কী? উইকেটে টিকে গেলে সেও মারতে পারে। তার হাতেও অনেক শট আছে। ওর ব্যাটিংটা দুই রকম হয়ে গেছে। একদিন তাড়াহুড়ো করছে। আর একদিন প্রেসারে ডিফেন্স করছে। আমি তাকে বলেছি তুই ফ্রি খেল। স্ট্রাইক রোটেড কর।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *