মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আছিয়া বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে বোনের শশুরের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়। ঘটনাটি গত ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার ঘটে। এমনকি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিশুটির দুলাভাই নিজেও।

সম্প্রতি এমন বোমাই ফাটিয়েছেন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে থাকা আছিয়ার বড় বোন। ধর্ষণের এই নেক্কারজনক ঘটনার পর ক্ষোভে ফুসছে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা।

মানুষের বিবেক কতটা নিচে নামলে ৮ বছরের একটা শিশুকে এভাবে অমানুষের মত নির্মমভাবে ধর্ষণ করতে পারে এমন প্রশ্ন নেটিজেনদের। ইতোমধ্যে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ ও স্বামী সজিব হোসেনকে। বর্তমানে শিশুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

জানা যায়, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের ৩য় শ্রেণি পড়ুয়া ৮ বছরের শিশু আছিয়া রমজান ও ঈদের ছুটিতে বেড়াতে আসে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালি মাঠপাড়া গ্রামে আপন বড় বোনের বাড়িতে। সেখানেই বৃহস্পতিবার আপন বোনের শ্বশুর হিটু শেখ দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় অবুঝ শিশুটি।

আছিয়ার বড় বোনের ভাষ্য অনুযায়ী তার স্বামী সজিব হোসেনও জড়িত এই ধর্ষণ কাণ্ডে। এমনকি সে নিজেই দরজা খুলে দিয়ে তার বাবাকে ঘরে ঢুকতে সাহায্য করেছে বলেও জানায় শিশুটির বড় বোন। এর আগে একাধিকবার তাকেও ধর্ষণের চেষ্টা করেছে শ্বশুর হিটু শেখ এমনটিও জানান তিনি। আপন বড় বোনের শ্বশুর আর স্বামীর দ্বারা এভাবে অবুঝ একটি শিশু ধর্ষণ হলে কিভাবে ছোট্ট মেয়ে শিশুদের নিরাপত্তা বজায় থাকে এমন প্রশ্নও রাখেন নেটিজেনরা। যাদের ঘরে মেয়ে শিশু রয়েছে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অনেকে আবার সচেতন থাকার পরামর্শও দেন অভিভাবকদের।

মেয়েটির বড় বোন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার ২০ দিন আগে সন্ধ্যায় বাড়িতে কেউ ছিল না। তিনি ঘরে আলো জ্বালিয়ে টয়লেটে যান। সেখান থেকে ফিরে দেখেন ঘরে আলো বন্ধ। এ সময় হঠাৎ একজন পেছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরে। উচ্চতা ও অন্যান্য বিষয় দেখে তিনি বুঝতে পারেন, জড়িয়ে ধরা ব্যক্তি তার শ্বশুর হিটু শেখ। বিষয়টি স্বামী সজিবকে তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। পরে বাবার বাড়ি চলে যান। আর স্বামীর বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন না। বাবা-মা বুঝিয়ে ছোট বোনকে সঙ্গে করে পাঠিয়ে দেন শ্বশুরবাড়ি।

পরিবার জানায়, আট বছরের শিশুটিকে গত বুধবার ধর্ষণের শিকার হয়। প্রথমে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গতকাল শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়।

অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার বিকাল ৫টার দিকে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মা বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার ৪ আসামি আগেই হেফাজতে ছিলেন। মামলার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। চার আসামি হলেন- শিশুটির ভগ্নীপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগম (৪০)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *