দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধের বিষয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, অপরাধী যত প্রভাবশালীই হোক, শাস্তি তাকে পেতেই হবে। অপরাধের বিষয়ে সরকারের নীতি জিরো টলারেন্স। যদি সেই অপরাধী সাবেক আইজিপি কিংবা সাবেক সেনাপ্রধানও হন তাকেও দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তির মুখে সমর্পণ করা হবে।
শুক্রবার (২৪ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো ব্যক্তি যত প্রভাবশালীই হোক, অপরাধ-অপকর্ম করতে পারে। এখানে প্রশ্ন থেকে যায়, তাদের অপরাধ-অপকর্মে শাস্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার সৎ সাহস দেখিয়েছে কি না। শেখ হাসিনার সরকারের সেই সৎ সাহস আছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন, দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীন। সেখানে যদি কেউ অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হয় আমরা কোন প্রটেকশন দেবো? হোক সে সাবেক আইজিপি কিংবা সাবেক সেনাপ্রধান। অপরাধ করলে দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তির মুখে সমর্পণ করা হবে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বুয়েটে আবরার হত্যাকাণ্ডে যাদের দণ্ড দেওয়া হয়েছে তারা সবাই ছাত্রলীগ। সরকার তাদের প্রটেকশন দিতে যায়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রেও সরকার কাউকে প্রটেকশন দেয়নি। ব্যক্তি অপরাধ করতে পারে। কিন্তু সরকার তাকে প্রটেকশন কেন দেবে? আমরা অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখি। সে যতই প্রভাবশালী হোক, অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দুঃশাসন ও জুলুম চালাচ্ছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুলের মানসিক ট্রমা মনে হয় ভয়ংকর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। তিনি ও তার দলের নেতারা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। তারা আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ। তাদের এদিকও নেই, ওদিকও নেই। বন্ধুরাও আগের মতো এসে তাদের উৎসাহিত করে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আগে ঘুম থেকে উঠেই মির্জা ফখরুল নাস্তা করতে মার্কিন দূতাবাসে হাজির হতেন। তাকে রাতেও খুঁজে পাওয়া যেতো না। বিদেশিরা ক্ষমতায় বসাবে সেই কর্পূরও উড়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোনো সাধারণ নাগরিক জেল-জুলুম-হয়রানির মুখোমুখি হয়নি দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা পুলিশ মেরেছে, পুলিশ হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করেছে, তারা তো অপরাধী। তাদের বিএনপি হিসেবে আটক করা হয়নি। আটক করা হয়েছে সন্ত্রাস ও আগুন সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অপরাধে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে অস্ত্রসহ আটকের পর তার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। খুনিদের পক্ষে বিএনপির যে প্র্যাকটিস এখনো সেটা চলছে। বিএনপির সব নেতাই তো বাইরে। তাহলে কে তাদের নির্যাতন করছে- প্রশ্ন রাখেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারের জনভিত্তি নেই- বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসেছে। বাংলাদেশে এ হার অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় সন্তোষজনক।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।