টানা ভারি বর্ষণে বাংলাদেশের ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যার পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলা। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে এসব উপজেলার ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। পানিবন্দী রয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
এমন পরিস্থিতিতে এসব এলাকা পুরোপুরি বিদ্যুতহীন হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল নেটওয়ার্কও।
বন্যার জন্য ভারতকে দায়ী করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আমাদের যখন পানির প্রয়োজন আপনারা পানি দিচ্ছেন না। আবার যখন পানির প্রয়োজন নেই আপনারা বাঁধ খুলে দিয়ে বন্যায় বাংলাদেশের মানুষকে সংকটের মধ্যে ফেলছেন। যারা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সংস্কারকে এবং পুনর্গঠনে বাধা দিতে চায়, তাদের আমরা ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আহত ছাত্রদের দেখতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে রয়েছি। যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ আমাদের সহায়তা করার কথা, সেখানে তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে।
বন্যাদুর্গতদের সহায়তার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও নোয়াখালীতে আমরা দেখেছি, বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনারা বন্যা আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। ব্যক্তি ও গোষ্ঠী পর্যায় থেকে সংগঠিত হয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান। কারণ, রাষ্ট্র পুনর্গঠন শুধু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তে সম্ভব নয়, আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ দৃশ্যমান হলে সেটি সম্ভব হবে।
এই সমন্বয়ক আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জন্মে এসে আপনারা যদি আমাদের যথাযথ রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সময় না দিয়ে গত ১৬ বছরের ব্যর্থতার দায়ভার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেন, তাহলে আমরা মনে করব, আপনারা আমাদের রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা না করে ষড়যন্ত্র করছেন। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সবাইকে আহ্বান করব এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দিন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার যখন পতন হলো, তখন বাজার তদারকি করে দেখা যায়, দ্রব্যমূল্য ক্রমে কমেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, নতুন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণে আবার সেই সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে।
বাজার সিন্ডিকেটকে সতর্ক করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা সেই সিন্ডিকেটকে সতর্ক করে দিতে চাই, আপনারা যদি জনমুখী কোনো সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সিন্ডিকেট কিংবা মাফিয়াতন্ত্র তৈরি করে বাজার ব্যবস্থাপনার মধ্যে কোনো ধরনের অসন্তুষ্টি তৈরি করেন, তাহলে ছাত্র-নাগরিক যেভাবে স্বৈরচারী শেখ হাসিনাকে গদি থেকে নামিয়েছিল, ঠিক একইভাবে এই মাফিয়াতান্ত্রিক সিন্ডিকেট রয়েছে, সেই সিন্ডিকেটগুলোকে ধ্বংস করবে।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম, মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ, আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আহমাদুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।