কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন প্রায় ৬৭ হাজার মানুষ। সেখানে খাদ্য সহায়তা এলেও শিশুদের জন্য রয়েছে খাদ্য সংকট। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা।
রোববার (২৫ আগস্ট) কুমিল্লার বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
জেলার বুড়িচং উপজেলার ফকিরবাজার উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে দুই শতাধিক মানুষ রয়েছে। এর মধ্যে ৫ বছরের নিচের শিশু রয়েছে ১৫ জন। তাদের যে খাবার দরকার তা পাচ্ছে না।
উপজেলার বাকশীমুল গ্রামের মো. জসীম উদ্দিন ও জেসমিন আক্তার দম্পতি রয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রটিতে। তাদের সঙ্গে দুই বছরের ফুটফুটে কন্যাশিশু আছে।
ওই দম্পতি বলেন, দুই মাস আগে মায়ের দুধ ছাড়ে মরিয়ম। ভারী কোনো খাবার খেত না। বুকের দুধ ছাড়ার পর গরুর দুধে অভ্যস্ত সে। গত দুদিন ধরে সেসব খাবার পাচ্ছি না। যেসব সংস্থা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবার সহায়তা দিচ্ছে, তাদের খাবার তালিকায় শিশুখাদ্য রাখার অনুরোধ জানাই।
ভরাসার উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ইছাপুরা এলাকার বানভাসি রুমা আক্তার ও জয়নাল আবেদীন আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের কোলে ১৬ মাসের পুত্রসন্তান আব্দুল্লাহ।
এই দম্পতি বলেন, আব্দুল্লাহ এখনও মায়ের দুধ খায়। তিনদিন ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। এখন বুকের দুধ একেবারেই মুখে নিতে চাচ্ছে না। মানুষের কারণে দুধ খাওয়ানোর সঠিক পরিবেশ পাচ্ছি না। ফলে শিশুখাদ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লা জেলাজুড়ে ৭১৪টি কেন্দ্রে ১৫ হাজার ৫৯ জন বিভিন্ন বয়সের শিশু আশ্রয় নিয়েছে। এসব শিশুদের মধ্যে যাদের বয়স ৩ বছরের ওপরে তাদের শুকনো বিস্কুট ও কলা খাইয়ে কোনোরকম দিন পার করা গেলেও যাদের বয়স ১ থেকে তিন বছরের মধ্যে সেসব শিশুদের নিয়ে দুঃশ্চিতায় আছেন তাদের অভিভাবকরা।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, শিশুদের বিষয়টি মাথায় রেখে দিকনির্দেশনা দিচ্ছি।