আইপিএলের মেগা নিলামের আগে গত আসরের তিন ফ্র্যাঞ্চাইজি তাদের অধিনায়কদের ছেড়ে দিয়েছিল। ফলে নিলামের শুরুতেই যে শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা চলবে অনুমিত ছিল সেটাই। ঋষভ পান্ত, শ্রেয়াশ আইয়ার ও লোকেশ রাহুলরা ছিলেন মার্কি ক্রিকেটারের তালিকায়। যাদেরকে দিয়ে নিলাম শুরু হয়, এরপর ব্যাপক কাড়াকাড়ি শেষে পান্তকে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৭ কোটি রুপিতে দলে ভেড়ায় লখনৌ সুপার জায়ান্টস। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি নাকি তার জন্য এত বরাদ্দ রাখেনি। পান্তকে দলে পাওয়ার পূর্ব-পরিকল্পনা থাকলেও, বাজেট ছিল আরও কম। তবে সবমিলিয়ে তারা এই ভারতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে পেয়ে সন্তুষ্ট। এর আগের আসরে নেতৃত্ব দেওয়া রাহুলকে আগেই ছেড়ে দেয় লখনৌ। এবার ডানহাতি এই ব্যাটারকে ১৪ কোটি রুপিতে কিনে নিয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস।
মার্কি ক্রিকেটারদের তালিকা থেকে প্রথমে পাঞ্জাব কিংস ২৬.৭৫ কোটিতে কিনে নেয় শ্রেয়াশ আইয়ারকে। যা আইপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দাম। এর আগে ২০২২ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাকে ১২.২৫ কোটিতে কিনেছিল। অর্থাৎ, আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি মূল্য বেড়েছে শ্রেয়াসের। অন্যদিকে, খানিক বাদেই তাকে পেছনে ফেলে ইতিহাস গড়েন পান্ত। দিল্লিতে ১৬ কোটি রুপিতে খেলা এই বাঁ-হাতির দাম এবার ২৭ কোটি রুপি। পরবর্তীতে পান্তকে বেশি দামে কেনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন লখনৌ সুপার জায়ান্টসের মালিক সঞ্জীব গোয়েনকা। তিনি বলেন, ‘আমাদের আগেই পরিকল্পনা ছিল পান্তকে দলে নেওয়ার। আমরা ওর জন্য ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলাম। ২৭ কোটি একটু বেশি হয়ে গেছে। তবে ওর মতো ক্রিকেটারের জন্য বাড়তি খরচ করাই যায়। ও দুর্দান্ত ক্রিকেটার। ম্যাচ উইনার।’ প্রথমদিনের নিলামে ৭ ক্রিকেটারকে কিনেছে লখনৌ। এর মধ্যে ডেভিড মিলার, মিচেল মার্শ ও এইডেন মার্করামের মতো তারকা বিদেশিরা রয়েছেন। এর বাইরে পান্তসহ চারজন ভারতীয় ক্রিকেটার। বাকিরা হচ্ছেন– আভেশ খান, আবদুল সামাদ ও আরিয়ান জুয়েল। সবমিলিয়ে তাদের নিলাম এখন পর্যন্ত ভালোই বলা চলে। এর আগে লখনৌ রিটেনশন নিয়মে ধরে রাখে– নিকোলাস পুরান, মায়াঙ্ক যাদব, রবি বিষ্ণয়, আয়ুশ বাদোনি ও মহসিন খানকে। সবমিলিয়ে নিজেদের নিলামে পাওয়া ক্রিকেটারদের নিয়ে লখনৌ সহ-মালিক (সঞ্জীবের ছেলে) শাশ্বত গোয়েনকা বলছেন, ‘আপনি কত খরচের পরিকল্পনা করছেন সেটি কোনো বিষয় নয়, সবসময় পরিকল্পনা সঠিক পথে আগায় না। আমাদের এই (পান্তকে কেনা) পরিকল্পনা ভালোভাবেই ছিল। এটি (২৭ কোটি রুপি) কোনো ম্যাজিক নম্বর নয়, আমরা শুধু একটি নম্বরই (খরচ করতে) চেয়েছি, যাতে আরটিএম ঝামেলা পাকাতে না পারে।’
অবশ্য পান্তের দাম এত বেশি হওয়ার পেছনে আরটিএমেরও দায় আছে। এই নিয়মে দিল্লি আবারও তাকে দলে নেওয়ার সুযোগ ছিল। তবে ২০ কোটি থেকে এক লাফে ২৭ কোটিতে লাফ দিয়ে লখনৌ মালিক পান্তকে একপ্রকার ছিনিয়ে নেন। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সামনে তাদের সাবেক অধিনায়ক রাহুলকেও নেওয়ার সুযোগ ছিল আরটিএমের কল্যাণে। তবে এবার আর ভারতীয় ব্যাটারের প্রতি লখনৌ আগ্রহ দেখায়নি। গত আসরেই সঞ্জীব গোয়েনকার সঙ্গে প্রকাশ্যে বিবাদ দেখা গিয়েছিল রাহুলের। যা নিয়ে লখনৌ মালিক তোপের মুখেও পড়েন।