বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি হয়নি।

মঙ্গলবার ধার্য তারিখে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানি করেননি। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষও মামলাটি শুনানি না করে সময়ের আবেদন করেন। সবমিলিয়ে আদালত পরবর্তী জামিন শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন।

চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, আজ চিন্ময় দাসের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষও শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন। আদালত জামিন শুনানির জন্য ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি ধার্য করেছেন। যেহেতু শুনানি হয়নি এ কারণে আসামিপক্ষের উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ নেই। আবার দায়রা জজ আদালতে অপেক্ষমাণ থাকার কারণে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও জামিন শুনানি করার সুযোগ নেই।

এক্ষেত্রে জামিন শুনানির ধার্য তারিখ ২ জানুয়ারি পর্যন্ত চিন্ময় দাসকে কারাগারে থাকতে হতে পারে কিনা জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী বলেন, ধার্য তারিখের আগে জামিন পেতে চাইলে চিন্ময় দাসের পক্ষের আইনজীবীদের একটি পথ খোলা রয়েছে। সেটি হচ্ছে তারা জামিন শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করতে পারেন। সেটি যদি আদালত না মঞ্জুর করেন, সেক্ষেত্রে এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যেতে পারেন। উচ্চ আদালত যদি মহানগর দায়রা জজকে তারিখ এগিয়ে এনে শুনানির জন্য নির্দেশনা দেন সেক্ষেত্রে ২ জানুয়ারির আগে শুনানির সুযোগ রয়েছে। তখনো জামিন দেওয়া না দেওয়া মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিষয়। এরপরও জামিন না হলে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতেও যেতে পারেন আবার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও জামিন শুনানি করতে পারেন।

এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মফিজুল হক ভূঁইয়ার পদত্যাগ ও অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের খুনিদের বিচারের দাবিতে আজও বিক্ষোভ করেছেন আইনজীবীরা। বেলা ১১টার দিকে আদালত এলাকায় বিক্ষোভ করে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

এর আগে গত (সোমবার) চিন্ময়ের জামিন প্রদান না করায় আদালত এলাকায় তার অনুসারীদের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলার দুই আসামির পক্ষে ওকালতনামা জমা দেন নেজাম উদ্দিন ও সানজিদা গফুর। তাদের মধ্যে নেজাম উদ্দিন পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়ার জুনিয়র এবং অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর।

উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর বিকালে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের একটি আদালতে হাজির করা হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন ইসকন ও চিন্ময়ের অনুসারীরা। টানা কয়েক ঘণ্টার বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে বিকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করেন কিছু ইসকন অনুসারী। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং স্থানীয় কয়েকজনের করা ভিডিও ফুটেজে হত্যার চিত্র দেখা যায়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *