ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার নামে এ পর্যন্ত আড়াইশ মামলা হয়েছে যার মধ্যে অধিকাংশই হত্যা মামলা।

স্থানীয় সময় সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র  আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি। সমাবেশে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেট ও মহানগর আওয়ামী লীগের যৌথ আয়োজনে ভারতে বসে ভার্চুয়াল সমাবেশে বক্তব্য দেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দোষারোপ করে হাসিনা বলেন, জঙ্গিদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তার পরিকল্পনাতে বাংলাদেশে এখন গণহত্যা চলছে।

উক্ত সভায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, ধর্মস্থান এবং ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আজ আমার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে মুহাম্মদ ইউনূসই ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে একটি সুনিপুণ পরিকল্পনার মাধ্যমে গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছেন। তারাই মাস্টারমাইন্ড।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া জনবিক্ষোভের জেরে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেছিলেন হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই নয় বরং ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিকরাও ইউনূস বাহিনীর মামলার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। মহিলা সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, দেশে যত জঙ্গি ছিল ড .ইউনূস সব জঙ্গিদের জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছেন। নরসিংদী জেল খুলে দেওয়া হয়েছিল। বগুড়া জেল হাজতে নির্যাতন ৭/৮ জন আওয়ামী লীগের কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, যত পরিকল্পনা করাই হোক না কেন আওয়ামী লীগকে ধংস করা এতটা সহজ নয়। আইয়ুব খানও চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগকে ধংস করতে, পারেন নাই। ইউনূস বাহিনীও পারবে না।

তিনি বলেন, আমি গণহত্যা চাইনি। আমি যদি ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চাইতাম, তা হলে গণহত্যা হতো। যখন নির্বিচারে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমার চলে যাওয়া উচিত। আমাকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমার নিরাপত্তারক্ষীরা তা ঠেকাতে যদি গুলি চালাতেন তবে গণভবনে বহু মানুষের মৃত্যু হতো। আমি তা চাইনি।’

আজ আমার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে আড়াইশ মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার অধিকাংশই হত্যা মামলা। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, তার হাতে মারা যাওয়া ৩৫ জন মৃত ব্যক্তি ইতোমধ্যে জীবিত হয়ে ফিরে এসেছেন বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল বক্তব্যের আগে সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র, নিউইয়র্ক স্টেট ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *