হিজবুল্লাহ-ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির কারণে কিছুটা হলেও স্বস্তি তৈরি হয়েছে লেবাননে। কিন্তু ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরাইলের পাল্টা পাল্টি হামলা বেড়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। হুথিরা ইসরাইলের অভ্যন্তরে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে যা গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর সাথে লড়াইরত ফিলিস্তিনিদের সাথে সংহতি প্রদর্শন হিসাবে দাবি করেছে।
এদিকে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করতে ইউরোপে সব কূটনৈতিক মিশনগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল।
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সা’র এক বিবৃতিতে বলেছেন, হুথিরা শুধু ইসরাইলের জন্য নয়, বরং গোটা অঞ্চল ও বিশ্বের জন্য হুমকি। তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো প্রথম ও মৌলিক পদক্ষেপ।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউ জিল্যান্ড ও ইসরাইল হুথিদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
গত শনিবার ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে তেল আবিব-জাফা এলাকায় আঘাত হানে। এতে ১৪ জন আহত হন।
হুথিদের পৃষ্ঠপোষকতায় আছে ইরান। ২০১৪ সালে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ তীব্র হওয়ায় এবং সৌদি আরবের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্বের জেরে হুতিদের সহায়তা বাড়িয়ে দেয় ইরান। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ২০২১ সালের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সমুদ্র মাইন, ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনসহ অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র ও কারিগরি সুবিধা দিয়ে হুতিদের সহায়তা করে ইরান।
ইরানের অ্যাক্সিস অব রেসিস্ট্যান্স-এর অংশ হুথিরা। এটি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও জায়নবাদের বিরুদ্ধে ইরানের নেতৃত্বে গঠিত একটি আঞ্চলিক সামরিক জোট। গাজায় হামাস ও লেবাননে হিজবুল্লাহর মতো ইয়েমেনে ইরানের আস্থার জায়গা হুতিরা।
ইসরাইলের জন্য হুথিরা এখন পর্যন্ত বড় কোনো হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হতে না পারলেও, তাদের প্রযুক্তি লোহিত সাগরে বিপর্যয় ঘটাতে সক্ষম। সম্প্রতি তারা লোহিত সাগরে ড্রোন ও জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে টার্গেট করছে, অনেক কোম্পানিকে তাদের রুট পরিবর্তন করে দীর্ঘ ও ব্যয়সাপেক্ষ পথে চলাচল করতে বাধ্য হতে হয়েছে, যা বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।