মাদারীপুর জেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলনটি মাদারীপুর পৌর অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা বিএনপির কর্মী সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন সংসদ নির্বাচনের সাথে সাথে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। আমাদের দলের স্পষ্ট অবস্থান জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন অ্যাকসেপ্ট করবো না। আমাদের দলের তরফে আমরা সু স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে করবো না। স্থানীয় সরকারের ব্যাপারে সরকার একটি কমিশন গঠন করেছেন। এই কমিশন কী রিপোর্ট দেয় তা আমরা আগে দেখতে চাই। তারপর আমাদের দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করবো। সরকার কি সংস্কার করে তা দেখবো এরপর সিদ্ধান্ত নিবো।
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলছেন। সংস্কারের জন্য এক বছর লাগে না। সরকারের মধ্যে অনেকেই বলেছেন অল্প সংস্কার হলে এক বছরের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব। তারা বেশি সংস্কার হলে কতদিন লাগবে? তা বলে না। আমি সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই বেশি সংস্কার হলেও নির্বাচন ৬ মাসের মধ্যেই সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, সরকার নিজেও কোনো সংস্কার করছে না। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কোন সংস্কার ছাড়াই পাবলিক সার্ভিসে নিয়োগ দিয়েছে, নির্বাচনে কমিশনের কোন সংস্কার ছাড়াই তারা নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দিয়েছে। বিচার বিভাগে সংস্কার না করে তারা বিচার বিভাগে নিয়োগ দিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনে সংস্কার না করে তারা দুর্নীতি দমন কমিশনের নিয়োগ দিয়েছে। মুখে তারা সংস্কারের কথা বলছে বাস্তবে তারা তাদের নিজেদের লোক বসিয়ে দিচ্ছে। যাদের নিয়োগ দিয়েছে তারা যোগ্য মানুষ, সম্মানিত মানুষ, শিক্ষিত মানুষ। সবই ঠিক আছে। কিন্তু এসব নিয়োগ সংস্কারের মধ্য দিয়ে কেন নয়? কেন আইন তৈরি না করে করা হচ্ছে? কেন হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরণ, হাসিনার পতিত পদ্ধতি অনুসরণ করে কেন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হলো? কেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হলো? কেন দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হলো? কেন ইলেকশন কমিশনে নিয়োগ দেয়া হলো? সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে। সুতরাং আপনারা সংস্কারের কথা বলছেন সংস্কার না করেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
তিনি এসময় উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ৫ মাস হয়ে গেলো। এই ৫ মাসের মধ্যে উপদেষ্টারা তাদের সম্পদের হিসাব দেননি। এটা দিতে পারতেন না? দেয়া উচিত ছিল। এখন পর্যন্ত দেখলাম না কোন উপদেষ্টা তার সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। ধরে নিচ্ছি তাদের বৈধ আয় আছে। সব ঠিক আছে। তারা একটি নজির তো তৈরি করতে পারতো। সেই নজির তারা তৈরি করেনি। সকারের কাছে একটি কথা আমরা বলতে চাই আপনারা মুখে মুখে সংস্কারের কথা না বলে প্রকৃত সংস্কারের কাজ শুরু করেন।
মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়ার সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক খোন্দকার মাসুকুর রহমান মাসুক, সেলিমুজ্জাম সেলিম, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, সহ গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস, সদস্য কাজী হুমায়ুন কবির প্রমুখ। বিএনপির কর্মী সম্মেলনটির সঞ্চালনা করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহানের।