মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসি বুধবার বলেছেন, গাজার ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি একটি অন্যায়, যেখানে মিশর কোনোভাবেই অংশ নেবে না।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের মিশর ও জর্ডানে স্থানান্তরের একটি পরিকল্পনা উত্থাপন করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় কায়রোতে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা তুলে ধরেন।
এল-সিসি বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের উচ্ছেদ ও বাস্তুচ্যুতি একটি বড় অন্যায়, যেখানে আমরা কোনোভাবেই অংশগ্রহণ করতে পারি না।”
তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে মিশরের ঐতিহাসিক অবস্থান কখনো পরিবর্তন হবে না এবং মিশর দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের ভিত্তিতে ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে মিশর
এল-সিসি বলেন, মিশর সবসময় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে।
তিনি ট্রাম্পের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে বহু প্রতীক্ষিত স্থায়ী ও ন্যায়সংগত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সক্ষম।
ট্রাম্পের বক্তব্য ও মিশরের প্রতিক্রিয়া
গত ১৯ জানুয়ারি ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়ার একটি পরিকল্পনা সামনে আনেন।
সোমবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমি আশা করি এল-সিসি কিছু গাজাবাসীকে গ্রহণ করবেন। আমরা তাকে অনেক সহায়তা করেছি, এবং আমি নিশ্চিত যে তিনিও আমাদের সাহায্য করবেন।”
জর্ডানের প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্প একই প্রস্তাব জর্ডানের জন্যও দেন। তবে জর্ডান এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে দেয়, জর্ডান জর্ডানিয়ানদের জন্য, এবং ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদের জন্য।
মিশরের অবস্থান ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই মিসর ও জর্ডান বারবার সতর্ক করেছে যে, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে মিসরে এবং পশ্চিম তীর থেকে জর্ডানে বাস্তুচ্যুত করার যে কোনো প্রচেষ্টা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি ধ্বংস করে দেবে।
এল-সিসি আরও বলেন, যদি ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করা হয়, তবে সেটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে চিরতরে মুছে ফেলবে।
মার্কিন সহায়তা ও মিসরের কূটনৈতিক গুরুত্ব
মিশর যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ আরব মিত্র এবং সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের বৈদেশিক সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্তের মধ্যে ইসরাইলের পাশাপাশি একমাত্র মিশরই বিশেষ ছাড় পেয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মিসরের এই কড়া অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা বাধার মুখে পড়তে পারে। তবে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে মিশরের দৃঢ় অবস্থান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পেতে পারে।