আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে। এর আগেও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারে প্রভাবশালী এক নেতার আত্মীয় হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এতোদিন কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বরাবর প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা।
আবেদন পত্রে উল্লেখ্য করে বলেন, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের বাংলা মাধ্যমের গণিত বিভাগের শিক্ষক আব্দুল কাদের। তিনি গত ২২ সেপ্টেম্বর পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া রাদিফাকে ক্লাসে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। এই ঘটনার পর শ্রেণী শিক্ষক মনিরা আফরোজের কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। ছাত্রীর অভিযোগ শুনার পর শিক্ষিকা মনিরা আফরোজ অভিযুক্ত শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চান। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে হালিম শেখ নামে এক শিক্ষকের ক্লাস চলাকালীন সময়ে ওই ছাত্রীকে জোর করে বের করার চেষ্টা করেন। ওই সময় ক্লাসের শিক্ষক হালিম শেখ বাধা দেন। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক ওই ছাত্রীর ডায়েরি নিয়ে যান আর ক্লাস শেষে একা দেখা করতে বলেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় গত ১৯-৯-২০২৪ তারিখে ৫ম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে দেখা করতে বলেন আব্দুল কাদের।
এর আগে, ২০২৩ সালে বিজ্ঞান ক্লাসে ওই ছাত্রীকে পেটে ও বুকে হাত দেয় শিক্ষক আব্দুল কাদের। এতে সে ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে বিদ্যালয়ে আসতে অনীহা প্রকাশ করে। এসময় বিদ্যালয়ে আসলেও সব সময় আতঙ্কিত অবস্থায় ক্লাসে অবস্থান করত সে। পড়াশোনায় ঠিকভাবে মনোযোগ দিতে পারত না। কিন্তু গত ২২-২-২০২৪ তারিখে তিনি হালিম শেখ (গণিত শিক্ষক) এর উপস্থিতিতে কাদের স্যার ক্লাসে ঢুকে ওই মেয়েকে বলে তুমি কেন আমার সাথে দেখা করনি। তখন ওই মেয়ে বলে আমার সহপাঠীরা আমাকে যেতে দেয়নি। তখন আব্দুল কাদের ক্ষিপ্ত হয়ে তার ডাইরি নিয়ে যায় এবং দেখে নিবে বলে শাসায়।
উল্লেখ্য এই কাদের আওয়ামী লীগের নেতা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের আত্মীয়। ২০১৩ সালে আওয়ামীলীগের ক্ষমতা খাটিয়ে চাকরি নেয় সে। এর আগে সে মুগদা শাখায় কর্মরত ছিল। ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারি অবৈধ নির্বাচনের আগে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ঢাকা ৮ আসন মানে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আসনে এমপি হওয়ার আগেই সে ক্ষমতা খাটিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি জনাব মাহিউদ্দিনের মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ার আতিক মাহিউদ্দিনকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে মতিঝিল প্রভাতি শাখায় বদলী হয়ে আসে। সে একজন অবিবাহিত শিক্ষক বয়স তার ৪৫। এর আগেও সে বিভিন্ন মেয়েদের গায়ে হাত দিয়েছে। এ ব্যাপারে অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ইমাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই নিকৃষ্ট কাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাএীদেরকে যৌন নির্যাতনকারী শিক্ষক মুরাদ আহমেদ ( মতিঝিল), আবদুল কাদের ( মতিঝিল), আবুল কালাম আজাদ( মতিঝিল), হুমায়ুন কবির ( বনশ্রী), আ: ছালাম মিয়া( বনশ্রী) কে দ্রুত চাকরি থেকে অপসারণ, চাকরিচূতি ও বিচারের মুখোমুখি করানোর ব্যবস্থা নিতে স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি, সদস্যবৃন্দ ও অধ্যক্ষ ভারপ্রাপ্ত ইমাম হোসেন স্যারকে অনুরোধ করছি। অন্যথায় চূড়ান্ত আন্দোলনের মাধ্যমে বিতাড়িত করতে বাধ্য হবে।