ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান অভিযানে এ পর্যন্ত ৩৩ জন জিম্মি নিহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, “ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দি প্রাণ হারিয়েছেন। গাজায় যে মাত্রার ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, তাতে তাদের দেহাবশেষও আর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।”
কবে কতজন জিম্মি নিহত হয়েছেন সেই তালিকাও প্রদান করেছে হামাস। সেটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ২০২৩ সালের ৯ অক্টোবর ৪ জন, ১৪ অক্টোবর ৯ জন, ৮ ডিসেম্বর ১ জন, ২০২৪ সালের ১ মার্চ ৭ জন, ৯ জুন ৩ জন, আগস্ট মাসে ৩ জন, ২ সেপ্টেম্বর ৬ জন নিহত হয়েছেন। ০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। ভয়াবহ এ অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৪ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও এক লক্ষাধিক। এই জিম্মিদের মধ্যে ১০৭ জনকে গত বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ঘোষিত এক অস্থায়ী বিরতিতে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। তারপর গত এক বছরে কয়েক জন জিম্মিকে উদ্ধার করতে পেরেছে ইসরায়েলি বাহিনী, কয়েকজন নিহতও হয়েছেন। বর্তমানে হামাসের কব্জায় ১০১ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে কতজন জিম্মি জীবিত রয়েছেন— তার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করেনি হামাস। তবে গাজায় অবিলম্বের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে টেলিগ্রাম পোস্টে বলা হয়েছে, “যদি আপনি নিজের জেদ থেকে সরে না দাঁড়ান এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি না দেন, সেক্ষেত্রে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে। তাই বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগে যা উচিত— তা করুন।”
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের সবচেয়ে পুরোনো ও বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠান হবে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি। ট্রাম্প ইতোমধ্যে আল্টিমেটাম দিয়েছেন যে অভিষেক অনুষ্ঠানের আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেখতে চান তিনি।