আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের রিভিউয়ের আবেদন নিষ্পত্তির মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বা পুনরায় কার্যকরী হয়েছে। তিনি বলেন, এটা নিয়ে কিছুটা ‘কনফিউশন’ ছিল। আজকের আদালতের রায়ের মাধ্যমে তা দূর হয়েছে। অর্থাৎ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এখন সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করা যাবে। বর্তমান সময়ের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল আরও বলেন, আমাদের হাইকোর্টে কিছু বিচারক আছেন, উনাদের ব্যাপারে সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। উনারা জুলাই গণবিপ্লবে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। তাছাড়া কারও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। এজন্য তাদের নিয়ে ছাত্র-জনতার অনেক ক্ষোভ রয়েছে। এসব ক্ষোভ সাংবিধানিকভাবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার একটি পথ খুলে গেছে। রোববার (২০ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, উচ্চ আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন। উচ্চ আদালত তাদের মতো করে ব্যবস্থা নেবেন। তবে আমরা মনে করি, এখন অন্তত ছাত্র-জনতা তাদের অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করার জন্য একটা উপযুক্ত ফোরাম পেল। আমরা এটার একটা ইতিবাচক অগ্রগতি দেখতে চাই।

আইন উপদেষ্টা বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিনের বিষয়ে সংবিধানেই বলা আছে। প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুজন বিচারক মিলে এই কাউন্সিল গঠিত হয়। কেউ যদি আজই সেখানে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন, তাহলে সেটির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল যখন বাতিল ছিল তখন উচ্চ-আদালতের বিচারকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ফোরাম ছিল না। আবার জবাবদিহি নিশ্চিত করার ইচ্ছাও তৎকালীন উচ্চ আদালতের প্রশাসনের ছিল না। কারণ তখন উনাদের ফরমায়েশি রায় হয়েছিল। আপনারা জানেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কি রকম রায় হয়েছে! তারেক রহমানকে বাংলাদেশে কথাই বলতে দেওয়া হয়নি! বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার মতো এমন রায়ও হয়েছে। এছাড়া বহু মানুষ তাদের মানবাধিকার রক্ষা করার সুযোগ পাননি। বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বর্তমানে যারা কর্তৃপক্ষ রয়েছেন, আদালতের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সদিচ্ছা তাদের আছে বলে আমি বিশ্বাস করি। এবার সেটা বাস্তবায়ন করার ফোরামও পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এটিকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *