আপনজনদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নীলফামারীর যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে যাত্রীদের।
রোববার (২৩ জুন) রাতে নীলফামারী আন্তঃজেলা বাসটার্মিনালে ছিল নগরে ফেরা মানুষের চাপ। ছুটি শেষ, কাজে যোগ দিতে হবে। তাই পরিবারের মায়া ছেড়ে যান্ত্রিক শহরে ফেরা। বাস ও ট্রেনে করে বহু মানুষ ঢাকায় ফিরছেন। তবে যাত্রীদের কাছ থেকে বাস ভাড়া বেশি রাখার অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। যাত্রীরা বাস কাউন্টারগুলোতে কর্মরত কর্মচারীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
ঈদের আগে অগ্রিম টিকিটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নীলফামারী-ঢাকা নন-এসি নরমাল কোচ বাসে সরকারি নির্ধারিত প্রতি কিলোমিটার ২ টাকা ১২ পয়সা হারে ৩৬১ কিলোমিটারের ভাড়া হয় ৭৬৫ টাকা ৩০ পয়সা, সেখানে ব্রিজের টোল ও অনান্যসহ নির্ধারিত হয়েছে ৯০০ টাকা।
কিন্তু সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় এর ভিন্ন চিত্র। নির্ধারিত ভাড়া উপেক্ষা করে বিভিন্ন কোম্পানির কাউন্টারগুলো ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে। অগ্রিম টিকিট বিক্রির নামে বিআরটিএর নির্ধারিত ৮০০-৯০০ টাকার বাসের টিকিট ১৫০০ টাকা, ১৪৫০ টাকার এসি টিকিট ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
টুপামারী থেকে মোফাজ্জল হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ছুটি শেষ হয়েছে, তাই দ্রুত ফিরতে হবে ঢাকায়। কিন্তু টিকিট পাচ্ছি না। ৭০০ টাকার ভাড়া ১৫শ টাকা চাচ্ছে। কয়েকটি বাস কাউন্টার ঘুরে একই চিত্র দেখলাম। ফলে বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই যেতে হচ্ছে।
তৈরি পোশাক শ্রমিক জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেক বছর ঈদপরবর্তী যাত্রার সময় বেশি দামে টিকিট কিনতে হয়। কাউন্টার থেকে টিকিট পাওয়া যায় না। এবারওতো সেই একই অবস্থা হলো। টিকিট নিয়ে এই কারসাজি বন্ধে প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মোতালেব মিয়া নামের এক যাত্রী জানান, পরিবারের টানে গ্রামে এসেছিলাম। আবার কর্মের প্রয়োজনে ফিরতে হচ্ছে কর্মস্থলে। এক দিন ছুটি বেশি কাটালে অফিস টাকা কেটে নেবে তাই চলে যাচ্ছি। বাসে ফিরতে সুবিধা কিন্তু বাড়তি টাকা নিচ্ছে। কী আর করার, কাজেতো ফিরতে হবে।
বিআরটিএ নীলফামারী সার্কেলের যানবাহন পরিদর্শক হিমাদ্রী ঘটক বলেন, সকল কাউন্টারে তালিকা প্রদর্শনের জন্য বলা হয়েছে। যারা করেননি তাদের বিরুদ্ধে আজ থেকে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কাউন্টারগুলো ভিজিট করবো।
নীলফামারী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের সভাপতি দেওয়ান বিপ্লব বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বাড়তি ভাড়া আদায়ের সুযোগ নেই। হয়তোবা ঢাকা থেকে ফিরতে যাত্রী পাওয়া যায় না, তাই একটু বেশি ভাড়া নেওয়া হতে পারে।