ভাটির জেলা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ১৩৭টি হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সেই ধান পহেলা বৈশাখ থেকে কাটতে শুরু করেন কৃষকরা। কিন্তু হঠাৎ আবহাওয়া অফিসের ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল নামার পূর্বাভাসে এখন পুরো হাওর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে হাওরের ১০ লাখ কৃষক বোরো ধানের চাষাবাদ করেছেন। অন্য বছরের তুলনায় এই বছর ফলন ভালো হলেও এরইমধ্যে শুরু হয়েছে কালবৈশাখী ঝড়, শিলা বৃষ্টি ও নদীর পানি বৃদ্ধি। ফলে আতংক আর উৎকণ্ঠা নিয়ে ধান কাটছেন কৃষকরা। উৎপাদিত ধান ঘরে তুলতে পারবেন কি না সেটা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী আগামী ৩ মে থেকে ভারী বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টির আভাসে ফসলহানির ঝুঁকি এড়াতে ১৩৭টি হাওরের পাকা ধান দ্রুত কাটার আহ্বান জানিয়ে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
হাওরের কৃষকরা জানান, আবহাওয়া পূর্বাভাস জানার পর থেকে হাওরের ধান কৃষকরা দ্রুত কাটছেন। কারণ বৃষ্টিপাত শুরু হলে কিংবা ঢল নামলে তাদের স্বপ্নের ফসল তলিয়ে যাবে।
তবে কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে দুই লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোর চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা। যেখান থেকে এই বছর ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হবে। টাকার অংকে যার বাজার মূল্য চার হাজার ১১০ কোটি টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ধান ঘরে তুলতে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলে সেই ধান যাতে কৃষকরা দ্রুত কেটে শুকিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান সেই পরামর্শ দিচ্ছি। এরইমধ্যে এই জেলার প্রায় ৮০ ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সকল নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। হয়ত আগামী ৩ মে থেকে ৭ মে সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল নেমে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।