বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে আহত জাকির হোসেন বাবুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়েছে। ব্যাংককের বেজথানি হাসপাতালে বাবুর চিকিৎসা হওয়ার কথা রয়েছে; সঙ্গে তার বোন সুবর্ণা আছেন।

শনিবার ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাকে ব্যাংকক নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বিমানবন্দরে বাবুকে বিদায় জানিয়েছেন।

আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় গঠিত টিমের সদস্য চিকিৎসক ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস-নিনসের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির হিমু গণমাধ্যমকে বলেন, ছাপাখানায় কাজ করতেন জাকির হোসেন বাবু। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ে গত ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। গুলিটি বাবুর পেটে ঢুকে কোমরের নিচের অংশ দিয়ে বের হয়ে যায়। গুলির কারণে বাবুর খাদ্যনালী, মুত্রনালী এবং কোমরের হাড় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি শরীরের বাম দিক অবশ হয়ে যায়। ওই সময় বাবুকে মুগদা মেডিকেল কলেজ নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।

তিনি আরও বলেন, মুগদা মেডিকেল কলেজে বাবুর পেটে দুই বার অস্ত্রোপচার করে তার খাদ্যনালীর অনেকটা কেটে ফেলা হয়। আর পেটে ফুটো করে মলত্যাগের রাস্তা বানিয়ে দেওয়া হয়। তবে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় সেপ্টেম্বরে তাকে বিএসএমইউতে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসায় বাবুর কিছুটা উন্নতি হলেও শরীরে পরে সংক্রমণ হওয়ায় অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে তার। এ অবস্থায় মেডিকেল বোর্ড তাকে দেশের বাইরে পাঠানার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৫ দিন আগে থাইল্যান্ডের চিকিৎসক দল এসে বাবুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। ওই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমকে জানানো হলে তিনি দ্রুত বাবুকে থাইল্যান্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মহোদয়ের নির্দেশে আমরা বাবুকে দ্রুত বিদেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। শুক্রবার তার টিকেট পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের মধ্যে এরইমধ্যে ৬ জনকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে বিদেশে গেছেন একজন। আরও কয়েকজনকে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *