ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে ল্যাপটপ আমদানিতে কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশীয় শিল্পের বিকাশে ২০২৩-২৪ বাজেটে ল্যাপটপ-কম্পিউটার আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। ফলে ল্যাপটপ আমদানিতে করহার দাঁড়ায় ৩১ শতাংশে। তবে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্র জানা যায়, নতুন ২০২৪-২৫ বাজেটে এ পণ্যটিতে শুল্ককর কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এনবিআর কর্মকর্তা বলেন, এ উদ্যোগের ফলে দেশের বাজারে সংস্কার করা (রিফাবরিশড) বা নকল পণ্য কম প্রবেশ করবে। স্থানীয় ফ্রিল্যান্সার ও সফটওয়্যার ডেভেলপারদের সহায়তা পাবে। ২০৪১ সালের মধ্যে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়ক হবে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে ২৭টি ডিজিটাল সেবা খাতে কর অব্যাহতি দিয়ে এনবিআর। ২০১১ সাল থেকে দেওয়া এ সুবিধা শেষ হচ্ছে আগামী জুনে। তথ্য ও প্রযুক্তিখাতে কর অব্যাহতি না বাড়াতে আন্তর্জাতিক ঋণ তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ রয়েছে। আইএমএফের পরামর্শ ও কর বাড়াতে অব্যাহতি না বাড়ানোর পক্ষে। নতুন বাজেটে এমন কিছু থাকার ইঙ্গিত থাকলেও সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে এনবিআর। কর অব্যাহতির সুবিধা আরও তিন বছর পর্যন্ত পেতে পারেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।
তবে এ খাতের ২৭টি উপখাত এ সুবিধার অন্তর্ভুক্ত থাকলেও এখন তা কমে দাঁড়াতে পারে ২০ থেকে ২৩টি। পাশাপাশি আইনি জটিলতায় নতুন বাজেটে সংসদ সদস্যদের (এমপি) গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে পারে সংস্থাটি। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর সিগারেট, কার্বোনেটেড বেভারেজসহ একাধিক পণ্যে শুল্ক বাড়ছে। অনেক পণ্যে ভ্যাটহার ১৫ শতাংশ করা হতে পারবে। এতে বাড়বে জীবনযাত্রার খরচ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তথ্যপ্রযুক্তি খাত। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতির সুযোগ ২০৩১ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনগুলো। সরকারের একাধিক মন্ত্রীও কর অব্যাহতির মেয়াদ বাড়াতে আবেদন জানিয়েছেন এনবিআরে। তারা বলছেন, কর অব্যাহতি তুলে দিলে পিছিয়ে পড়বে এ খাত। সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যাবে না।
জানতে চাইলে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আইসিটি খাতে কর অব্যাহতি পুরোপুরি তুলে না দিতে বিভিন্ন মহলের অনুরোধ রয়েছে। কিছুক্ষেত্রে কর অব্যাহতি পুরোপুরি উঠে যাবে। এটা শতভাগ হবে।’ যদিও কর অব্যাহতি তুলে দিলে তথ্যপ্রযুক্তি খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।
জানতে চাইলে হ্যালো টাস্কের প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ ইমপ্যাক্ট অফিসার মাহমুদুল হাসান লিখন বলেন, কর অব্যাহতি উঠলে ছোট-বড় সব স্টার্টআপ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একে তো আমরা মুনাফা কম করি, যতটুকু করি তার ওপরে যদি করপোরেট কর দেওয়া লাগে তাহলে কেউই লাভ করতে পারবে না। তবে ক্ষতিটা কত বড় হবে এটা বলা কঠিন। যতটুকু সুবিধা পাচ্ছিলাম সেটাও যদি তুলে নেওয়া হয় তাহলে টেক ইন্ডাস্ট্রি মুখ থুবড়ে পড়বে।
দেশের প্রধান রেফারেল হাসপাতালগুলোর মধ্যে রয়েছে— বারডেম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, অ্যাপোলো হাসপাতাল, জয়নুল হক সিকদার মহিলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইব্রাহিম ইকবাল মেমোরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড ইত্যাদি।
এছাড়া ব্যাংকে জমা টাকার ওপর আবগারি শুল্কের স্তর ও হারে পরিবর্তন আসতে পারে। এর ফলে ব্যাংকে জমা টাকা রাখার খরচ বাড়ছে। তবে এ পরিবর্তনের স্রোত ছোট আমানতকারীদের ওপর পড়বে না। পড়বে বড় আমানতকারীদের ওপর।