প্রতীকী ছবি

পবিত্র রমজানের সময়গুলো খুব দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছে। রহমতের দশক শেষে মাগফিরাতের দশকও বিদায় নিচ্ছে। হাতছানি দিচ্ছে নাজাতের দশক। দেখতে দেখতে একদিন মাহে রমজানও বিদায় নেবে। মূলত রমজান আসে মানুষের আত্মশুদ্ধির জন্য। পাপমুক্তির জন্য। কিন্তু আমরা কতটুকু পাপমুক্ত হতে পারছি? কতটুকু রহমত ও ক্ষমা অর্জন করতে পারছি? আমরা পুরো বছরের ইবাদত পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ

কি জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছি? মহান মালিকের দয়া ও অনুগ্রহ পাওয়ার উপযুক্ত হয়েছি? অথচ আল্লাহ তায়ালা নিজে দয়াবান ও ক্ষমাশীল হওয়ায় আমাদের রমজানুল মুবারক দান করেছেন। বান্দা যেন তাকওয়া অর্জন করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে, সেজন্য তিনি রোজার বিধান দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে,‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়ামকে ফরজ করা হয়েছে, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।থ (সুরা বাকারা : ১৮৩)

পুরো বছরে এই একটি মাসের জন্যেই আসে রোজা। বাকি ১১ মাসে কারণে-অকারণে আল্লাহর থেকে দূরে থাকা বান্দাদের দ্রুত কাছে আসার সংক্ষিপ্ত একটা সুযোগ এই পুণ্য লাভের রমজান। তাই নৈকট্য লাভ করতে হলে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে, গুনাহ ছাড়তে হবে। আর এটাই রমজানের অন্যতম মাহাত্ম্য।

পুরো সপ্তাহের ইবাদত পুষিয়ে আনার জন্য শুক্রবার। আর পুরো বছরের ইবাদত পুষিয়ে আনার জন্য রমজান মাস। রমজান মাসকেও যদি কেউ পুরোপুরি মূল্যায়ন না করতে পারে, তা হলে তার জন্য ইতিকাফ। ইতিকাফেও কারও অসুবিধা থাকলে তার জন্য শবে কদর। শবে কদরেও যদি পোষাতে না পারে, তা হলে ঈদের আগের রাত রয়েছে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য। আল্লাহ তায়ালা রমজানজুড়ে এত এত ব্যবস্থা রেখেছেন, তারপরও যদি কেউ আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও পাপ মুচন করতে না পারে, আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর ভাষ্য হলো, ‘সে হতভাগা, সে ধ্বংস হোক।থ (আল-আদাবুল মুফরাদ : ৬৪৬)

রমজানের দ্বিতীয় দশক মাগফিরাত বা ক্ষমা প্রার্থনার। ক্ষমা প্রার্থনা অন্যতম ইবাদত। তবে এ ক্ষমা প্রার্থনা অবশ্যই অকৃত্রিম হতে হবে। যারা ক্ষমা প্রার্থনায় ও জীবনের কর্মকাণ্ডে আল্লাহর পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি অর্জন করতে সক্ষম হবে তারাই আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাবে। আল্লাহ বলেন, ‘নভোমণ্ডল ও ভূখণ্ডের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল পরম মেহেরবান।থ (সুরা ফাতাহ, আয়াত : ১৪)

এ ক্ষমা আল্লাহর সন্তুষ্টি, ভালোবাসা ও করুণার বহিঃপ্রকাশ। যা সরাসরি জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে বাঁচার মাধ্যম। ক্ষমাপ্রাপ্ত ও ক্ষমাবঞ্চিত উভয় দলের পরিণতির বর্ণনা দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেন, ‘যারা ভাগ্যবান (ক্ষমাপ্রাপ্ত) তারা থাকবে জান্নাতে, সেখানে তারা স্থায়ী হবে তত দিন পর্যন্ত, যত দিন আকাশ ও পৃথিবী থাকবে, যদি না তোমার রব অন্যরূপ ইচ্ছা করেন। এ এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কারথ (সুরা হুদ, আয়াত : ৮)।

যারা ক্ষমাবহির্ভূত তাদের সম্পর্কেও মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর যারা হতভাগা হবে তারা জাহান্নামে থাকবে। সেখানে তারা চিৎকার ও আর্তনাদ করবে। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, যত দিন আসমান ও জমিন বর্তমান থাকবে। তবে তোমার রব যদি অন্য কিছু চান। নিশ্চয়ই তোমার রব যা চান তা-ই করে থাকেন থ (সুরা হুদ, আয়াত : ১০৬-১০৭)। মাহে রমজানের আর যে কয়টা দিন বাকি আছে, আমরা যেন ইবাদতে অবহেলা না করি। প্রতিটা মুহূর্ত যেন আমলে আমলে ভরপুর করে তুলতে পারিÑসে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

AKTV/MASUD

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *