ম্যাচটা ‘ফাইনাল’। সেটা ম্যানচেস্টার সিটি আর পিএসজির লড়াইয়ের আগে বলে রেখেছিলেন কোচ পেপ গার্দিওলা। সে ফাইনালে তার দলকে স্তব্ধ করে দিয়েছে পিএসজি। ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও ম্যাচটা সিটি হেরেছে ৪-২ গোলে। দ্বিতীয়ার্ধে পিএসজি লিখেছে অবিশ্বাস্য এক প্রত্যাবর্তনের গল্প, চলে এসেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে অফে যাওয়ার কক্ষপথে। কপাল পুড়েছে সিটির, লিগ পর্বের শীর্ষ ২৪ থেকে ছিটকে গিয়ে বিদায়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে তাদের।

ম্যাচটা পেপ গার্দিওলা আর পিএসজি কোচ লুইস এনরিকের জন্য একটু আলাদাই ছিল। কারণ এই ম্যাচে যে দুই সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থের দেখা হয়ে গেছে। ডাগআউটের লড়াইয়ে দুই কোচ দশ বছর আগে এক দ্বৈরথে মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেবার বার্সেলোনা কোচ এনরিকে শেষ হাসি হেসেছিলেন গার্দিওলার বায়ার্নের বিপক্ষে, হাসলেন এবারও।

প্রথমার্ধে পিএসজি আধিপত্য দেখিয়েছে বেশ। তবে তারা গোল করতে ব্যর্থ হয়। আশরাফ হাকিমির একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। তবে দ্বিতীয়ার্ধে সিটি খেলার চেহারাই বদলে দিয়েছিল শুরুতে। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে মাঠে নামা জ্যাক গ্রিলিশ গোল করেন একটু পরই। ৫৩ মিনিটে আর্লিং হালান্ড যখন গোল করলেন, তখন সিটির জয়কেই ভবিতব্য মনে হচ্ছিল।

তবে চলতি মৌসুমে সিটির খেলার ধরন অনুসরণ করলে আপনি তাদের লিড খুইয়ে বসার পক্ষেও বাজি ধরে ফেলতে পারতেন। সেটা করলে সফলও হতে পারতেন বৈকি। কেন? কারণ এই মৌসুমে এগিয়ে গিয়েও পয়েন্ট খোয়ানোর, হেরে বসার প্রতিযোগিতায় নেমেছে রীতিমতো। এই তো এক সপ্তাহ আগে প্রিমিয়ার লিগে ব্রেন্টফোর্ডের মাঠে ২ গোলে এগিয়ে গিয়েও ২-২ ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল গার্দিওলার দলকে।

সেটা পার্ক দেস প্রিন্সেসেও হলো বুধবার রাতে। পিএসজি দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার তিন মিনিটের মধ্যে প্রত্যুত্তর দিল। ৫৬ মিনিটে গোলটা করলেন উসমান দেম্বেলে। ৬০ মিনিটে দৃশ্যপটে এলেন ব্র্যাডলি বারকোলা, তার গোলে সমতায় ফিরল পিএসজি। প্রথমার্ধে জোর চেষ্টা করেও দুই দল গোলের দেখা পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধের ১৫ মিনিটেই দেখা মিলে যায় ৪ গোলের, আরেকটু স্পষ্ট করে বললে, এই গোলগুলো এসেছে ১০ মিনিটের এদিক ওদিকে।

পিএসজি এরপর চেষ্টা চালিয়েছে জয়সূচক গোলের। সেটা তারা পেয়ে যায় ম্যাচের ৭৮ মিনিটে। গোলটা করেন জোয়াও নাভাস। শেষ মুহূর্তে এই গোলের খাতায় নাম লেখান গনসালো রামোস। তাতে ৪-২ গোলে হারের গ্লানি ম্যানচেস্টারে ফেরার বিমানে সঙ্গী হয় সিটির।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্লে অফে খেলাটা অনিশ্চিতই হয়ে গেল পেপ গার্দিওলার দলের। চলতি মৌসুমে বাজে সময় কাটানো দলটা এখন আছে টেবিলের ২৫ নম্বরে। শেষ ম্যাচে যদি ক্লাব ব্রুগাকে হারাতে না পারে, তাহলে সেটা হয়ে যাবে চলতি মৌসুমে সিটির শেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *